লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে পেটানো সেই তরুণ দুই দিনের রিমান্ডে
মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতির জন্য থামা একটি লঞ্চে দুই তরুণীকে প্রকাশ্যে মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার তরুণ নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা একটার দিকে মুন্সিগঞ্জ আমলি আদালত-১–এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
এর আগে গত শনিবার মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার যোগনীঘাট এলাকার বাসিন্দা নেহাল আহমেদকে আটক করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানা–পুলিশ। গত রোববার সকালে এ ঘটনায় তাঁর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করা হয়। মুক্তারপুর নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মিলন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। একই দিন দুপুরে এ মামলায় নেহাল আহমেদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মুন্সিগঞ্জ আদালতে নেয় পুলিশ।
এজাহার অনুযায়ী, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলাটি হয়েছে। এতে যৌন নিপীড়ন, বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে অনধিকার প্রবেশ, মারধর করে ভাঙচুর, ক্ষতি ও হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মুক্তারপুর নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত রোববার আসামি নেহালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করি। আদালত সোমবার শুনানির দিন ধার্য করেন। আজ (গতকাল) শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এরপর আসামি নেহালকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে থানায় এনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এমভি ক্যাপ্টেন নামের লঞ্চে করে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে ২০০-৩০০ যাত্রী নৌ ভ্রমণে বের হন। প্রথমে লঞ্চটি রাজধানীর সদরঘাটে থামে। সন্ধ্যার দিকে লঞ্চটি চাঁদপুরের মোহনপুরের উদ্দেশে সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসে। এরপর রাত আটটার দিকে নাশতা নেওয়ার জন্য মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে লঞ্চটি থামানো হয়। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল আলমের বক্তব্য অনুযায়ী, সে সময় ওই লঞ্চের কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে স্থানীয় লোকজন মাদকাসক্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে লোকজন লঞ্চের ভেতরে গিয়ে তল্লাশি চালান। সেখানে কয়েকজনকে ‘আপত্তিকর অবস্থায়’ পাওয়ার অভিযোগ তুলে লঞ্চে ভাঙচুর ও কয়েকজনকে মারধর করেন তাঁরা।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, দুই তরুণীকে লঞ্চের একেবারে সামনের অংশে উঠিয়ে বেল্ট দিয়ে পেটাচ্ছেন এক তরুণ। এ সময় স্থানীয় লোকজন সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করে উল্লাস করছিলেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।