মেয়েকে বাঁচানোর আকুতি বাবার

কিশোরী কৃষ্ণা রানী
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরী কৃষ্ণা রানী অন্য ছেলেমেয়েদের মতো ছিল হাসিখুশি ও চঞ্চল। খেলাধুলায় ছিল পারদর্শী। বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে ঘুরতে যেত, করত প্রাণ খুলে গল্প। কবিতা আবৃত্তিও করত মেয়েটি। প্রাণচঞ্চল মেয়েটি এখন নির্জীব হয়ে গেছে। মেরুদণ্ডের হাড় বেঁকে সে এখন অসুস্থ। তার চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য পরিবারের নেই। উপায় না পেয়ে মেয়েকে বাঁচানোর আকুতি জানিয়েছেন বাবা।

১৫ বছর বয়সী কৃষ্ণা রানী সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার বাবা রঘুনাথ খাঁ দীপ্ত টেলিভিশন ও বাংলা ’৭১ পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

রঘুনাথ খাঁ বলেন, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসক জানিয়েছেন—কৃষ্ণার মেরুদণ্ডের হাড় বেঁকে গেছে। এখন অস্ত্রোপচার ছাড়া বিকল্প কোনো চিকিৎসা নেই। অর্থের অভাবে অস্ত্রোপচার করতে না পারায় মেয়ের মেরুদণ্ডের হাড় আরও বেঁকে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত যন্ত্রণায় মেয়েটি কষ্ট পাচ্ছে। মেয়েটিকে বাঁচানোর আকুতি এখন কার কাছে জানাবেন?

স্বজন ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের শেষের দিকে করোনাকালে কৃষ্ণা রানী অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে সময় সোজা হয়ে হাঁটতে পারছিল না। দেখা দেয় শ্বাসকষ্টও। চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর মেরুদণ্ডের হাড় বেঁকে যাওয়ার বিষয়টি প্রথম জানা যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কৃষ্ণা স্কোলিওসিস রোগে আক্রান্ত। গত ৩ জুলাই ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে একাধিক হাসপাতালে কৃষ্ণাকে দেখানো হয়। দুই সপ্তাহ সেখানে থেকে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকে দেখাতে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে দুই লাখ টাকা শেষ গেছে। বেঙ্গালুরুর মনিপাল হাসপাতালের স্কলিওসিস রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিদ্যাধর জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কৃষ্ণা সম্পূর্ণ সুস্থ জীবন ফিরে পেতে পারে। আর এ জন্য ব্যয় হবে ভারতীয় ১৫ লাখ রুপি। এত অর্থ জোগানের সামর্থ্য পরিবারের নেই।

রঘুনাথ খাঁ বলেন, পৈতৃক সূত্রে নামমাত্র জমি পেয়েছিলেন তিনি। সাতক্ষীরা শহরে ভাড়া বাসায় তাঁদের বসবাস। দিন এনে দিন খাওয়ার মতো পারিবারিক অবস্থা তাঁর। দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ চালান অনেক কষ্টে। এত টাকা খরচ করে মেয়ের চিকিৎসা করাবেন কীভাবে? তাই মেয়েকে বাঁচানোর জন্য বিত্তশালী ও হৃদয়বান মানুষের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।