‘ভালো আছি, শিগগির দেশে ফিরছি’

তুরস্কে ভূমিকম্পে ধসে পড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী গোলাম সাঈদ
ছবি: প্রথম আলো

তুরস্কে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৩৭ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী গোলাম সাঈদ ওরফে রিংকু (২৮) হাসপাতাল থেকে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তুরস্কের কাহরামানমারাস সুতচু ইমাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিষয়ে পড়েন তিনি। আজ বুধবার সকালে মা-বাবা, ভাই–বোনসহ স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন সাঈদ।

এ সময় গোলাম সাঈদ স্বজনদের বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিধস্ত ভবন থেকে উদ্ধারের পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি অক্ষত আছেন। তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সাঈদের ছোট ভাই গোলাম রসুল আজ সকালে প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

গোলাম রসুল বলেন, ‘ভাইয়া সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। আজ সকালে তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে প্রায় এক ঘণ্টা কথা হয়েছে। মা-বাবা, ভাই–বোনসহ পরিবারের সবার সঙ্গে তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলেছেন। বারবার বলেছেন—“আমি ভালো আছি, সুস্থ আছি। শিগগির দেশে ফিরছি।’” তিনি আরও বলেন, ‘ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় জিজ্ঞাসা করেছিলাম, বিধস্ত ভবনের কোথায় তিনি আটকা পড়েছিলেন? ওই ভবনে আর কারা ছিল? জবাবে ভাইয়া জানিয়েছেন, আচমকা বিকট শব্দ। হুড়মুড়িয়ে ভবন ধ্বসের পর সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়। এরপর আর কিছু তাঁর মনে নেই। কারা, কীভাবে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে এসেছেন, কিছুই মনে করতে পারছেন না।’

আরও পড়ুন

গতকাল রাতে গোলাম সাঈদকে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবিত উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স রফিকুল ইসলাম। পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘তুরস্কে গোলাম সাঈদ রিংকুকে ভবনের নিচে চাপাপড়া অবস্থা থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য। তিনি শারীরিকভাবে প্রচণ্ড দুর্বল।’

আরও পড়ুন

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার দেওনাই গ্রামের গোলাম সাঈদ বগুড়া শহরের আর্মড পুলিশ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ২০১৫ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য তুরস্কে যান। তাঁর বাবা গোলাম রব্বানী পেশায় কৃষক। আর মা সালমা বেগম গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে সাঈদ মেজ।

আরও পড়ুন

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে গত সোমবার ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। তুরস্কের স্থানীয় সময় ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। এতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রাণহানির সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থলের কাছে খাহরামানমারাস শহরের একটি ভবনে থাকতেন গোলাম সাঈদ। ভূমিকম্পের পর ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ভেতরে আটকা পড়েন গোলাম সাঈদ। এর পর থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না পরিবারের লোকজন।