অল্প সময়ে অধিক লাভ, শসা চাষে খুশি কৃষক

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে খেত থেকে শসা তুলে রাস্তার পাশে রাখা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে গোবরাকুড়া সীমান্ত সড়কেছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার উত্তর গোবরাকুড়া গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম (৪৮) রমজান মাসে শসা বিক্রি করার লক্ষ্য নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক একর জমিতে শসা চাষ করেছেন। পবিত্র রমজানে শসার কদর বেশি থাকায় তিনি তিনগুণ লাভের মুখ দেখেছেন। তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে চাষ ও খেতের পরিচর্যা করলে শসা চাষে অল্প সময়ে অধিক লাভ পাওয়া যায়।

শসা চাষ করে সিরাজুলের মতো হালুয়াঘাট উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের কয়েকশ কৃষক লাভবান হয়েছেন। কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, এবার এক একর জমিতে তিনি শসা চাষ করেছেন। এতে তাঁর খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। গত ১৫ দিনে দুই বার খেত থেকে শসা তুলেছেন ৫১ মণ। সেই শসা বিক্রি করেছেন ৭১ হাজার টাকা। রমজান মাসের মধ্যে আরও ৬০ মণ শসা তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন।

সিরাজুল বলেন, ধানের চেয়ে শসা চাষে লাভ বেশি। দুই থেকে আড়াই মাসে ফলন পাওয়া যায়। রমজানে মাসে শসার কদর বাড়ে। তাই খেত থেকেই এক মণ শসা বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৪০০ টাকায়।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী উপজেলার ভূবনকুড়া, গাজিরভিটা, সদর, জুগলী, ধুরাইল ও ধারা ইউনিয়নে এবার এক হাজার একর জমিতে শসা চাষ হয়েছে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত শসা লাগানোর উপযুক্ত সময়। এতে কৃষকের বেশি খরচ লাগে না। মাত্র আড়াই মাসেই খেত থেকে শসা তোলা যায়। রমজান মাসে ক্রেতারা কৃষকের খেত থেকেই এই শসা সংগ্রহ করে থাকেন। এতে কৃষকেরা দামও ভালো পান।

গোবরাকুড়া গ্রামের আরেক কৃষক নুর হোসেন (৫২)। তিনি ৫০ শতক জমিতে শসা চাষ করেছেন। উৎপাদন খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। গত ১৫ দিনে শসা বিক্রি করেছেন ৪০ হাজার টাকার। আরও ৩-৪ বার খেত থেকে শসা তুলতে পারবেন। নুর হোসেন বলেন, ‘শসা চাষ করে অল্প সময়ে বেশি লাভ করা যায়। রমজান মাসে শসার ভালো দামও পাওয়া যায়। তাই আগামী বছর দেড় একর জমিতে শসা চাষ করব।’

হালুয়াঘাট উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আ ন ম মাহবুল হক বলেন, উপজেলার কৃষকেরা সারা বছরই শসা চাষ করে থাকেন। তবে এবার অধিকাংশ কৃষক এই রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ফেব্রুয়ারি মাসে শসার খেত করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো। অন্য সময়ের চেয়ে কৃষকেরা শসার দামও ভালো পাচ্ছেন। ফলে তাঁরা খুশি।