মানিকগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ, পুলিশ–সাংবাদিকসহ আহত ৩০

সংঘর্ষের সময় ইটপাটকেলের আঘাতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আজ বেলা ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ শহরের খালপাড় এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের খালপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটপাটকেলের আঘাতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকারসহ তিন পুলিশ সদস্য ও দুই সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশের লাঠিপেটায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বিএনপির পাঁচ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন
ছবি: প্রথম আলো

পুলিশ ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বেলা ১১টার দিকে শহরের দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শহরের উত্তর সেওতা এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে দিকে যাচ্ছিলেন। পথে খালপাড় এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ নেতা–কর্মীদের লাঠিপেটা করে। এতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা–কর্মী আহত হন।

এরপর পুলিশ বিএনপির নেতা–কর্মীদের ধাওয়া করে। একপর্যায়ে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে ইটপাটকেলের আঘাতে সদর থানার ওসি আবদুর রউফ সরকার, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন, মো. শাহীন এবং ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিনিধি আর এস মঞ্জুর রহমান ও বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধি সাজেদুর রহমান আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে
ছবি: প্রথম আলো

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে পুলিশ অগণতান্ত্রিক আচরণ করছে। পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেলে দলের ২৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়া পাঁচ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।’

এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহা বলেন, এ ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

সদর থানার ওসি বলেন, আহত দুই কনস্টেবলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনিও আহত হয়েছেন। আটকের বিষয়সহ বিস্তারিত পরে জানানো হবে।