বরগুনায় আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক এমপি শম্ভুকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ, জামিন নামঞ্জুর
বরগুনায় বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পরে এজলাস থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে আদালত প্রাঙ্গণে শম্ভুকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে সদর থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে বরগুনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় শম্ভুর পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। পরে আদালতের বিচারক মনিরুজ্জামান জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে বরগুনা কারাগারে আনা হয়। আজ তাঁকে আদালতে হাজির করার খবর পেয়ে আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় ‘শম্ভুর আস্তানা, বরগুনাতে হবে না’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়। এ সময় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ শম্ভুর উদ্দেশে ডিম ছুড়ে মারেন। সেই ডিম শম্ভুকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানের ওপর পড়ে।
বরগুনা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নুরুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় শম্ভুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ আদালতে হাজির করার পর আসামিপক্ষে তাঁর জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শম্ভুর নানা অপকর্মের কারণে আদালতের বাইরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সাধারণ মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং তাঁর গাড়িতে ডিম ছুড়ে মেরেছেন। তবে ডিম তাঁর গায়ে পড়েনি।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। গত বছরের ১২ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় ও আশুলিয়া থানার আরেকটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০২৩ সালের ১৭ মার্চ বরগুনা জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর, সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ ও হাতবোমা ফাটিয়ে নৈরাজ্য তৈরির অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। জেলা বিএনপির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক এস এম নজরুল ইসলামের ছেলে এস এম নইমুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ৩০ এপ্রিল সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৫৮ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়।