টিসিবির পণ্য নিতে আসা ব্যক্তিকে ইউপি চেয়ারম্যানের কিল–ঘুষি, ভিডিও ভাইরাল

গাইবান্ধা জেলার মানচিত্র

টিসিবির পণ্য নিতে আসা এক অসচ্ছল ব্যক্তিকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করেছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে ইউপি কার্যালয়ে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগী মোজাহিদুল ইসলাম রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বড় মহানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর তাঁকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর স্ত্রী রুমা বেগমের নামে একটি টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) কার্ড রয়েছে। মোজাহিদুল ইসলামের অভিযোগ, স্ত্রী রুমা বেগমের টিসিবির কার্ডের মালামাল নিতে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তিনি এই হামলার শিকার হন।

ঘটনার সময় এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান মোসাব্বির পরিষদে থাকা বেশ কিছু লোকজনকে বের করে দিচ্ছেন। এ সময় গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মোজাহিদুল ইসলাম (৪৫) নামের এক অসচ্ছল ব্যক্তিকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন চেয়ারম্যান। তিনি তাঁকে ধাক্কিয়ে ধাক্কিয়ে বের করে দিচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেন আজ বুধবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোজাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি টিসিবির ডিলারের কাছে চাঁদা দাবি করে। টিসিবির ডিলারের টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। বিকেলে তারা ডিলারের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। টাকার ব্যাগ নিয়ে টানাহেঁচড়া করতে থাকে। এ নিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এক ইউপি সদস্য বিষয়টি আমাকে ফোনে জানায়। ঘটনাস্থলে এসে দেখি, তারা ডিলারের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করছে। বাধা দিলে তারা আমার ও ইউপি সদস্যদের ওপর চড়াও হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত করতে আমি পরিষদ কার্যালয় থেকে তাকে বের করে দিই। তাকে কোনো মারধর, কিল-ঘুষি মারি নাই।’

তবে মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল সকাল থেকেই ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবির কার্ডের মালামাল দেওয়া হচ্ছিল। বিকেল ৩টার দিকে সর্বশেষ প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ জন কার্ডধারীকে মালামাল দিতে সময়ক্ষেপণ করেন সংশ্লিষ্ট ডিলার। পরে চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেন ও ডিলারের পক্ষ থেকে উপস্থিত সবাইকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। অপেক্ষা করেও বিকেল ৫টা পর্যন্ত মালামাল পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে উপস্থিত কার্ডধারীদের মধ্যে হইচই শুরু হয়। এতেই চেয়ারম্যান মোসাব্বির ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

মোজাহিদুল আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যান হঠাৎ করে আমার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালান। এ সময় তিনি আমার মাথা, বুকে ও পিঠে কিল-ঘুষ মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে ধাক্কিয়ে ধাক্কিয়ে পরিষদ থেকে বের করে দেন। এতে গুরুতর আহত হই।’
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন মোজাহিদুল ইসলাম। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।