শিক্ষকদের বাড়ি নির্মাণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাড়ি নির্মাণে বাধা ও শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতা ও স্থানীয় এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মির্জাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা হলেন রাজশাহী মহানগর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এখলাছুর রহমান ও স্থানীয় বাসিন্দা আলামীন হোসেন।

মির্জাপুর ফ্ল্যাট মালিক সমিতির পক্ষে থানায় অভিযোগ দেওয়া তিন শিক্ষক হলেন ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আমিরুল ইসলাম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হ্যাপি কুমার দাস এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক মো. ওসমান গণি।

জিডি ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, নগরীরর মতিহার থানার মির্জাপুর এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা মিলে প্রায় ১১ কাঠা জমি ক্রয় করেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি নির্মাণের অংশ হিসেবে শ্রমিকেরা মাটি কাটছিলেন। এ সময় মেহেদী হাসান, মো. আলামীন এবং এখলাছুর রহমানের নেতৃত্বে আনুমানিক ১৫-২০ জনের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। তারা দেশীয় অস্ত্রসহ শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দুটি ট্রাক ও এক্সকাভেটর ঘটনাস্থল থেকে সরাতে বাধ্য করে। এ সময় তারা শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে বলে, তাদের অনুমতি ছাড়া কোনো নির্মাণকাজ করা যাবে না।

জানতে চাইলে বাড়ির মালিকানায় থাকা ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক আমিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল শ্রমিকেরা কাজ করতে গেলে তারা তাঁদের ভয়ভীতি দেখায়। তাঁদের মারতে উদ্ধত হয়। তারা বলে, ‘আমাদের কথা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হবে না।’

অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান বলেন, ‘যে জায়গাটিতে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটি ময়লা–আবর্জনার স্তূপ ছিল। আমরা স্থানীয় কয়েকজন মিলে জায়গাটি পরিষ্কার করি। সে সময় শিক্ষকেরা কথা দিয়েছিলেন বাড়ি নির্মাণের কাজটি আমাদের দিয়ে করাবে। কিন্তু হঠাৎ করে দেখি, বাইরের লোকজন গিয়ে কাজ করছে। পরে আমরা কথা বলতে গিয়েছিলাম। এখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এখলাছুরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করলেও কথা বলতে রাজি হননি।

অভিযুক্ত আলামীন বলেন, ‘আমি কাজে বাধা দিইনি। গতকাল আমি সেখানে ছিলামই না।’

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’