তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলেন অপহৃত ৬ রোহিঙ্গা, আটক ১
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং চাকমারকুল-২১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের অপহৃত ছয় রোহিঙ্গা তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছেন। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অপহরণকারীরা চাকমারকুল পাহাড়ি এলাকায় তাঁদের ছেড়ে দেন। পরে তাঁরা আশ্রয়শিবিরে ফেরেন।
এ ঘটনায় জড়িত মোহাম্মদ বেলাল (৩৫) নামের একজনকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। আটক বেলাল উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারকুল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জালাল আহমেদ ছেলে। মাটি কাটার কাজের কথা বলে ছয় রোহিঙ্গাকে আশ্রয়শিবির থেকে ডেকে নিয়েছিলেন তিনি।
রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৬ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মঞ্জুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার রাতে টেকনাফের চাকমারকুল রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বাইরে কাজের কথা বলে ছয় রোহিঙ্গাকে শিবির থেকে বের করা হয়। ওই ছয়জনকে টেকনাফের পল্লানপাড়া এলাকায় নিয়ে যান দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁদের হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। অপহৃতদের হাতে থাকা মোবাইল থেকে পরিবারের কাছে জনপ্রতি ৫০ হাজার করে মোট ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে তাঁরা অভিযান চালান। পরে শনিবার সন্ধ্যায় তাঁদের ছেড়ে দেন অপহরণকারীরা। অপহরণের শিকার ওই রোহিঙ্গাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ছয়জনের স্বজনদের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে অপহরণকারীরা তাঁদের ছেড়ে দিয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্থানীয় বাসিন্দা বেলালকে আটক করা হয়েছে।
মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসা রোহিঙ্গারা হলেন টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারকুল ২১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বি-৭ ব্লকের আমির হাকিমের ছেলে মো. ফরোয়াজ (৩৮) ও মো. জোহার (৩০), মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ নূর (৩৫), আবুল হোসেনের ছেলে নুরুল হক (৩০), ইউসুফ আলীর ছেলে জাহিদ হোসেন (৩৫) ও একই শিবিরের সি-১ ব্লকের আবদুস সালামের ছেলে মো. ইদ্রিস (১৯)।
ফিরে আসা আমির হাকিমের ছেলে মো. জোহার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কারা তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে, তাদের চিনতে পারেননি। তবে বেলালের হাতে তাঁদের পরিবার টাকা দিয়েছে। অপহরণকারীরা টাকা বুঝে পেয়ে তাঁদের ছয়জনকে ছেড়ে দিয়েছেন।
১৬ এপিবিএনের উপ অধিনায়ক ও পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা বলেন, অপহৃত ছয় রোহিঙ্গা ছাড়া পেয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় খেত পাহারারত চার কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অপহরণকারী চক্রকে ৯ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাঁরা ফিরে আসেন।