সরিষাবাড়ীতে ‘নলকূপের পানি পানে’ আরও দুই ছাত্রী অসুস্থ

নলকূপের পানি পান করে অসুস্থ এক ছাত্রী জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন
ছবি: প্রথম আলো

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় ‘নলকূপের পানি পানে’ আরও দুই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আজ বুধবার সকালে বাড়িতে দুই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে দুই দিনে ১২ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গেল। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলার বগারপাড় উচ্চবিদ্যালয় ও বগারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান দুই দিন ধরে বন্ধ।

অসুস্থ দুই ছাত্রী হলো মিম আক্তার ও দীশা খাতুন। মিম দশম শ্রেণির ছাত্রী। আর দীশা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

মিম আক্তর বলে, ‘সকালে বাড়িতে মাথা ঘুইরা পইড়া যাই। আমার গলা শুকায় যায়, কথাবার্তা বলতে পারি নাই, শরীরে খিচুনি শুরু হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অক্সিজেন শূন্যতা, মানসিক চাপ ও ভয়ের কারণে এ রকম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিটি মেয়ে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। আজ সকালেও দুই ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও অসুস্থ ছাত্রীদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বগারপার চাইল্ড কেয়ার কোচিং সেন্টারে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অষ্টম ও নবম শ্রেণির কয়েক ছাত্রী পড়তে যায়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাদের কয়েকজন কোচিং সেন্টারের নলকূপ থেকে পানি পান করে। পানি পানের পর ১৬ ছাত্রী অসুস্থ বোধ করার কথা জানায়। রাত ৯টার দিকে ১০ ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকি ৬ ছাত্রীকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই ১৬ ছাত্রী বগারপার উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ে। বগারপার গ্রামে তাদের বাড়ি। চিকিৎসা নিয়ে রাতেই তারা বাড়ি ফিরেছে।

এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় একই কোচিং সেন্টারে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি ছাত্রীরা পড়তে যায়। রাত সাড়ে ৮টায় তাদের কয়েকজন কোচিং সেন্টারের নলকূপ থেকে পানি পান করে। পানি পানের পর ১৬ ছাত্রী অসুস্থ বোধের কথা জানায়। পরে রাতে ১০ ছাত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আরও পড়ুন

বগারপার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গুলজার হোসেন বলেন, প্রতিদিন পাঠদানের সময় ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আশরাফুল আলমের নির্দেশে দুই দিন বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ থাকার পর গত রোববার শুরু করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পাঠদান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দুই দিন ধরে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম বলেন, বিদ্যালয়ের অসুস্থ ছাত্রীদের চিকিৎসার বিষয়ে সব সময় খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। বগারপার এলাকায় এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।