রায়পুরায় প্রার্থীকে হত্যা
৭২ ঘণ্টার মধ্যে সুমনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম সংসদ সদস্যের
নরসিংদীর রায়পুরায় জনসংযোগের সময় প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়ার জানাজায় অংশ নিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দীন আহমেদ।
আজ বৃহস্পতিবার বাদ আসর উপজেলার সেরাজনগর এম এ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁকে সেখানে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে আসেন হাজারো মানুষ। জানাজায় অংশ নিয়ে নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনের সাতবারের সংসদ সদস্য এবং সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দীন আহমেদ এ আলটিমেটাম দেন।
পুলিশ ও প্রশাসনকে কঠোর বার্তা দিয়ে রাজিউদ্দীন আহমেদ বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সুমনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। রায়পুরার মাটিতে কোনো খুনিদের ঠাঁই হবে না। হত্যাকারীদের ধরিয়ে দিতে পারলে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। যদি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে রায়পুরায় কঠোর আন্দোলন করা হবে। প্রয়োজনে রেলপথ ও সড়কপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
জানাজায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য রিয়াজুল কবীর কাউছার, পৌর মেয়র জামাল মোল্লা, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্যের ছেলে রাজিব আহমেদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাদ মাগরিব চরসুবুদ্দি ইউনিয়নের ঈদগাহ মাঠে সুমন মিয়ার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাঁর প্রতিবেশী, স্বজন, রাজনৈতিক সহকর্মী, বন্ধুসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ অংশ নেন। এরপরই পারিবারিক কবরস্থানে সুমন মিয়াকে দাফন করা হয়।
গতকাল বুধবার দুপুরে রায়পুরার পাড়াতলী ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিপক্ষের হামলায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া আহত হন। জমির আল ধরে দৌড়ে পালিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় থানা-পুলিশের সদস্যরা তাঁকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সুমন মিয়া উপজেলার চরসুবুদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের ছেলে। তিনি এবারের উপজেলা নির্বাচনে তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। তিনি অ্যাগ্রো ফার্ম, পোলট্রি ফিড ও মাছের খামারের ব্যবসা করতেন। নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। এদিকে হত্যাকাণ্ডের এক দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলা করতে থানায় যাননি নিহতের পরিবারের কোনো সদস্য। তবে বৈধ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় রায়পুরায় নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।