তারাগঞ্জে দুর্ঘটনার ১৮ ঘণ্টা পরও মেলেনি এক ব্যক্তির পরিচয়

সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছেন। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানায়
ছবি: প্রথম আলো

রংপুরের তারাগঞ্জে অ্যাম্বুলেন্স, ইজিবাইক ও ট্রাকের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে একজনের পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি। অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের জন্য আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আলমত সংগ্রহ করেছে।

এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তারাগঞ্জে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের নেংটিছিড়া ব্রিজ-সংলগ্ন এলাকায় ইজিবাইকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় ইজিবাইকের পেছনে থাকা একটি ট্রাক ওই ইজিবাইককে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ইজিবাইকে থাকা এক ছেলেশিশু ও তিন ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তৎক্ষণাৎ স্থানীয় লোকজন আহত তিনজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত দুজনকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পরিচয় শনাক্ত করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁরা হলেন তারাগঞ্জের আলমপুর ইউনিয়নের শেরমস্ত বানিয়াপাড়া গ্রামের আজানুর রহমান (৪৫), একই ইউনিয়নের পাতিলভাঙা গ্রামের খাদেমুল ইসলাম (৩৮), উত্তর চাদখানা গ্রামের লাবু মিয়া (১৩) ও সৈয়দপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী (৫২)। তবে নিহত এক ব্যক্তির এখনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। ওই ব্যক্তির আনুমানিক বয়স ৫০ বছর। তাঁর পরনে সাদা চেক লুঙ্গি, কালো পাঞ্জাবি ও মেরুন রঙয়ের জ্যাকেট আছে।

আজ বেলা ১১টা ২০ মিনিটে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়ার উপস্থিতিতে সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের জন্য আলামত সংগ্রহ করেন।

রংপুর সিআইডির (এসআই) উপপরিদর্শক নির্মল সরকার বলেন, পরিচয় শনাক্তের জন্য প্রয়োজনী সব ধরনের আলামত নেওয়া হয়েছে। এখানে নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে সার্ভার ঠিকমত কাজ করছে না। নিহত ব্যক্তির স্মার্টকার্ড থাকলে অল্প সময়ের মধ্যে পরিচয় পাওয়া যাবে।

তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. মাহাবুব মোরশেদ বলেন, নিহত চারজনের পরিচয় শনাক্ত করে লাশ নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য একজনের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

তারাগঞ্জের ইউএনও রাসেল মিয়া বলেন, এখন সবার কাছেই মুঠোফোন থাকে। কিন্তু সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলেই সেগুলো উধাও হয়ে যায়। এতে তাৎক্ষণিকভাবে পরিচয় শনাক্ত করতে ঝামেলায় পড়তে হয়। পরিচয় শনাক্ত হওয়া নিহত চার ব্যক্তির পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। নিহত আরেক ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেলে তাঁর পরিবারকেও লাশ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।