দুর্নীতির মামলায় ডোমার পৌরসভার মেয়র মনছুরুল কারাগারে

মনছুরুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

৫৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় নীলফামারীর ডোমার পৌরসভার মেয়র মনছুরুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে নীলফামারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মাহমুদুল করিম তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ২৩ আগস্ট দুদকের রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. হোসাইন শরীফ বাদী হয়ে পৌর মেয়র মনছুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় অগ্রণী ব্যাংক নীলফামারী শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক রথীন্দ্র নাথ সরকারসহ আরও দুজনকে আসামি করা হয়।

ওই মামলায় গত ৩০ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন মনছুরুল ইসলাম। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সোমবার আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করেছিলেন।

মামলায় সংক্ষিপ্ত এজাহার থেকে জানা গেছে, ডোমার পৌরসভার মেয়র মনছুরুল ইসলাম শাওন অটো ব্রিকস লিমিটেডের নামে ২০১৪ সালে অগ্রণী ব্যাংক নীলফামারী শাখা থেকে ১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। সেই সময় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক রথীন্দ্র নাথ সরকার ও সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের যোগসাজশে নিয়ম ভেঙে তিনি একসঙ্গে সব টাকা উত্তোলন করেন। ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সুদে-আসলে ২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ক্ষতি করেন মেয়র মনছুরুল। অন্যদিকে ২০১৬ সালে ব্রিকস ফিল্ডের জন্য ঋণপত্রের মাধ্যমে তিনি বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করে বন্দর থেকে মালামাল উত্তোলন করেননি। এতে বন্দর কর্তৃপক্ষের পাওনা দাঁড়ায় ৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাংকঋণ ও বন্দর কর্তৃপক্ষের পাওনা মিলিয়ে মোট ৫৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবু মোহাম্মদ সোয়েম প্রথম আলোকে বলেন, পৌর মেয়র মনছুরুল তাঁর একটি ইটভাটার যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আনার জন্য অগ্রণী ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। তিনি বন্দর থেকে ওই যন্ত্রপাতি কিছু তুললেও অর্থসংকটে বাকিগুলো তুলতে পারেননি। এ নিয়ে ১৬ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংক নীলফামারী শাখার সঙ্গে তাঁর একটি সমঝোতা হয়। সমঝোতার পর ২৩ আগস্ট দুদক তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন ছিলেন তিনি। আজ নীলফামারীর বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাঁরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. কামরুজ্জামান বলেন, মেয়র মনছুরুল তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য অগ্রণী ব্যাংক নীলফামারী শাখা থেকে যে ঋণ নিয়েছেন, সেটা যেভাবে ব্যবহার করার কথা ছিল, তিনি তা করেননি। এ জন্য দুদক তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ওই মামলায় ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন তিনি। আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।