বরিশালের গৌরনদীতে নিখোঁজের ১০ দিন পর পুকুর থেকে একটি মেয়েশিশুর (১০) লাশ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন আসামি পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। সেই সঙ্গে হত্যার আগে শিশুটিকে ধর্ষণের কথা জানিয়েছেন তাঁরা। এর মধ্যে এক আসামি আজ শনিবার দুপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
গৌরনদী উপজেলার বাটাজোড় ইউনিয়নের একটি গ্রামে ওই শিশুর বাড়ি। সে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাশের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশুটি। পরে ২৪ ডিসেম্বর বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ওই দিন শিশুটির বাবা গৌরনদী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। গতকাল শুক্রবার মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার উত্তর মোড়াকাঠি এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল ব্যাপারী (২৪), গৌরনদীর বাটাজোর এলাকার সাকিব খান (১৯) ও দক্ষিণ পশ্চিম পাড়ার লিটন সরদার (৩০)।
বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত গৌরনদী থানার জিআরও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মু. বেল্লাল হোসেন বলেন, আজ বরিশালের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফসানা শারমিন ইভার আদালতে আসামি ইসমাইল ব্যাপারী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে আজ বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজওয়ান আহমেদ জানান, গ্রেপ্তার তিন তরুণ ও যুবক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের মধ্যে ইসমাইল আজ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ধর্ষণে আরও কেউ জড়িত ছিলেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজওয়ান আহমেদ আরও জানান, ইসমাইল ব্যাপারীর বিরুদ্ধে মাদক আইনে গৌরনদী, উজিরপুর এবং ঢাকার শাহবাগ ও সূত্রাপুর থানায় মামলা রয়েছে। লিটনের বিরুদ্ধে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলা রয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুস মিয়া জানান, শিশুটির মা নেই। বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। ১৪ ডিসেম্বর বাড়ির পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যায় শিশুটি। কিছু সময় পর বিয়ের বর নিয়ে আসা ইজিবাইকে বসে ছিল শিশুটি। তখন খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে পাশের একটি বাগানে নিয়ে যান আসামিরা। সন্ধ্যার পর শিশুটিকে ধর্ষণ করেন ওই তিন তরুণ ও যুবক। পরে শ্বাস রোধ করে শিশুটিকে হত্যা করে লাশটি পাশের পুকুরে ফেলে দেন।
ওসি জানান, গতকাল সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে প্রথমে ইসমাইল ব্যাপারীকে আটক করা হয়। পরে তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাকিব ও লিটনকে আটক করা হয়।