কুষ্টিয়ায় পোশাক দেখে বাবার লাশ শনাক্ত করল ছেলে

ইজিবাইকচালক শাহিনুল হক
ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার মিরপুরে খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় অর্ধগলিত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কুষ্টিয়া বাইপাস মহাসড়কের রোজ হলিডে পার্কসংলগ্ন জিকে সেচ প্রকল্পের খাল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

লাশটি কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ–ব্লক এলাকার নিখোঁজ ইজিবাইকচালক শাহিনুল হকের (৪৭) বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। ১৮ মে বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন লিটন।

পুলিশ বলছে, পরনে লাল গেঞ্জি ও জিন্স প্যান্ট দেখে তাঁর ছেলে নিশ্চিত হয়েছেন যে এটা তাঁর বাবার লাশ। শাহিনুল হক (লিটন) নিখোঁজের ঘটনায় তাঁর স্ত্রী মনিরা হক বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। শাহিনুল কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ–ব্লক এলাকার মৃত ইজাবুল হকের ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে জিকে সেচ প্রকল্পের খালে একটি অর্ধগলিত লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয় লোকজন।  প্রথমে ওই ব্যক্তির লাশ দেখে তাঁকে কেউ চিনতে পারেননি। পরে নীল নামে এক কিশোর লাশ দেখে শনাক্ত করে লাশটি তাঁর বাবা শাহিনুলের।

নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৮ মে বিকেলে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হন শাহিনুল। এর পর থেকে তাঁর কোনো হদিস মেলেনি। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফনটিও বন্ধ ছিল। নিখোঁজের ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিটনের স্ত্রী সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। শাহিনুলের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তারা উচ্চমাধ্যমিকে পড়াশোনা করে। পরিবার জানায়, নিখোঁজের দিন ইজিবাইক নিয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল এলাকার দিকে যান শাহিনুল।

শাহিনুলের নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা জানান, শাহিনুল নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল। পরে ২৫ মে নিখোঁজ শাহিনুলের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মডেল থানায় মামলা করেছেন।

কাঁদতে কাঁদতে নিহত শাহিনুলের স্ত্রী মনিরা হক বলেন, ‘ছেলে লাশের কাছে গেছে। সে পরনের প্যান্ট, জামা ও রং দেখে আমাকে জানিয়েছে যে লাশটি ওর বাবার।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, লাশটি দেখে মনে হচ্ছে কয়েক দিন আগেই ক্যানালের মধ্যে কচুরিপানার নিচে ফেলে রাখা হয়েছিল। লাশটি অর্ধগলিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তার পরনে লাল গেঞ্জি ও জিন্স প্যান্ট ছিল। পোশাক দেখে লাশটি নিখোঁজ ইজিবাইকচালক শাহিনুলের বলে শনাক্ত করেছে তাঁর পরিবার। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে।