জুলাই ঘোষণাপত্রে শ্রমিক, মেহনতি মানুষের আত্মত্যাগের কথা আনতে হবে: সারজিস আলম
‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ যেন কয়েকজনের কথা না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, এই ঘোষণাপত্রে প্রতিটি জেলা ও উপজেলার শ্রমিক, মেহনতি মানুষের আত্মত্যাগের কথা উঠিয়ে আনতে হবে। এটি যেন কয়েকজনের কথা না হয়।
আজ শুক্রবার সকালে ভোলায় ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের’ পক্ষে জনমত তৈরিতে আয়োজিত পথসভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণসংযোগের অংশ হিসেবে ভোলা শহরে লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি সরকারি স্কুলসংলগ্ন ইলিশ চত্বর মোড়ে পথসভার আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার প্রতিটি জায়গায় সিন্ডিকেট বসিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে উল্লেখ করে সারজিস আলম আরও বলেন, সমতার একটি বাংলাদেশ দেখতে চায় বাংলার মানুষ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে সামনে রেখে সারা বাংলাদেশে ছাত্র–জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ থেকে খুনি শেখ হাসিনাকে বিতারিত করে ভারতে পাঠিয়েছে। তাই যেই ব্যানার সামনে রেখে এত বড় একটি অভ্যুত্থান হলো, সেই ব্যানারের নাম সুস্পষ্টভাবে ওই ঘোষণাপত্রে থাকে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম আরও বলেন, ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণ একটি নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের অধীন চরম জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছে। বাংলার মানুষ হাতে হাত রেখে বাংলার মাটিতে লড়াই করে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারকে বিদায় করেছে। সে জন্য বাংলার জনগণ সরকারের কাছে অবিলম্বে ২৪–এর অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে সবার আগে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিচার দেখতে চায়।
গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহত ব্যক্তিদের সরকারি খরচে চিকিৎসা, আওয়ামী খুনি ও তাদের দোসরদের বিচার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পরিষ্কারভাবে উল্লেখসহ সাত দফা যৌক্তিক দাবি নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র দ্রুত রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করবে বলে সভায় আশা প্রকাশ করেন সারজিস আলম।
পথসভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুর রহমান (তুহিন), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এম এ সাঈদ প্রমুখ। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি ভোলার সমন্বয়ক, শিক্ষার্থী ও জনতা উপস্থিত ছিলেন।
নেতারা ভোলা বাংলাস্কুল মোড়, সদর রোড, নতুন বাজার এলাকায় সাত দফা দাবিতে ঘোষণাপত্রের লিফলেট বিতরণ করেন। পরে ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত জসিম উদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান।