দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখায় একজনকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ
দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখায় বগুড়ার শেরপুরে সোহাগ রানা ওরফে জনি (২৪) নামের এক তরুণকে স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা আটক করে পুলিশের সোপর্দ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেরপুর সরকারি কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে থানা-পুলিশ সোহাগ রানাকে জুলাই আন্দোলনের বিস্ফোরক দ্রব্য ও হামলার মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে। শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রেপ্তার সোহাগ রানার বাড়ি উপজেলার বনমরিচা গ্রামে। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তবে কলেজ এলাকার অন্তত পাঁচ ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, কলেজের দেয়ালে ও বিভিন্ন দেয়ালে তিন-চার দিন ধরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান কে বা কারা লিখেছেন, তা তাঁরা দেখেননি।
গত ২ নভেম্বর থানায় করা এই বিস্ফোরক দ্রব্য ও হামলার ঘটনার মামলার বাদী ছিলেন উপজেলার খন্দকারটোলা এলাকার রিফাত সরকার। গত ১৭ জুলাই শহরের ধুনট রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলার অভিযোগে এ মামলা করা হয়। মামলায় এজাহারনামীয় আসামিসংখ্যা ছিল ১৪৭। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করা হয় আরও অনেককে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপপরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শেরপুর শহরে সরকারি কলেজের দেয়ালসহ কলেজের আশপাশের বনমরিচা এলাকার বিভিন্ন দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখায় স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তি সোহাগ রানাকে আজ আটক করেন। এ সময় কয়েকজন তাঁকে মারধর করেন। এরপর আটক সোহাগ রানাকে থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে থানা-পুলিশের মাধ্যমে সোহাগ রানাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর ২ নভেম্বরের ওই মামলায় তাঁকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়।
বেলা দুইটার দিকে শেরপুর থানায় গেলে দেখা যায়, সেখানে সোহাগ রানার মা জোসনা বেগম ও স্ত্রী লাকি বেগম এসেছেন। লাকি বেগম প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, শেরপুর সরকারি কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখার সঙ্গে তাঁর স্বামী জড়িত নন। তাঁর স্বামীকে সন্দেহ করে স্থানীয় বিএনপির কিছু লোকজন তাঁদের বাড়ির সামনে থেকে তুলে এনে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন।
জোসনা বেগম বলেন, তাঁর ছেলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। এ কারণেই ‘মিথ্যা’ অভিযোগ তুলে তাঁর ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। তিনি তাঁর ছেলের মুক্তি দাবি করেন।