গজারিয়ায় চলন্ত বাসে স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা

প্রতীকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় চলন্ত বাসে এক স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে বাসচালক এবং চালকের সহকারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করেন। পরে মেয়ের চাচা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ এসে চালক ও চালকের সহকারীকে নিয়ে যায়। কিন্তু দুজনই অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে পরিবারের কাছে তাদের হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাখির মোড় অংশে এ ঘটনা ঘটে। চালকের বয়স ১২ বছর, তার সহকারীর বয়স ১৫। তারা দুজন মেসার্স আর এম ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির একটি মিনিবাস চালায়। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

স্কুলছাত্রীর বরাত দিয়ে তার চাচা ও স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল বিকেলে স্কুল শেষে বাড়িতে ফেরার জন্য মেসার্স আর এম ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির একটি মিনিবাসে ওঠে ওই ছাত্রী। বাসটিতে কোনো নম্বর প্লেট ছিল না। বাসটিতে ওই সময় ছয়-সাতজনের মতো যাত্রী ছিল। এক-দেড় কিলোমিটার যাওয়ার পর বাস থেকে বাকি যাত্রীরা নেমে যান। কোনো যাত্রী না থাকার সুযোগে বাসের চালক ও সহকারী মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। তার মুঠোফোন নম্বর চাইতে থাকে। ফোন নম্বর না দিলে বাস থেকে নামতে দেওয়া হবে না বলে জানায় চালক ও সহকারী। মহাসড়কের পাখির মোড় এলে বাস থেকে নামার সময় গেট আটকে ধরে তারা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর চাচা বলেন, ‘আমার ভাতিজি বাড়িতে ফিরে আমাদের ঘটনাটি বলে। তাৎক্ষণিক আমরা পাখির মোড় বাসস্ট্যান্ডে যাই, অভিযুক্তদের দেখি। অভিযুক্তদের দেখে আমি রীতিমতো বিস্মিত হই। এত কম বয়সে ওরা বাস নিয়ে কীভাবে সড়কে নামল, কী করে এমন ঘটনা ঘটাল। ওই ছেলে দুটি এর আগেও মহাসড়কে কয়েকটি এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি পরে ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাই। পুলিশ এসে ওদের আটক করে নিয়ে যায়।’

মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) খায়রুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যার আগে মেয়েটি বাসে করে পাখির মোড় এলাকায় নামে। তখন মেয়েটি চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে বাসটিকে আটক করেন। তখন চালক ও চালকের সহকারীকে আটকে পুলিশে খবর দেন তাঁরা। তবে বাসের চালক ও সহকারী দুজনের বয়স ১২ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ছিল। তাই আইনগতভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তী সময়ে ওই ছাত্রীর চাচা এসে অভিযুক্ত দুজনকে তাদের মায়ের কাছে হস্তান্তর করে দেন। মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর চাচা বলেন, ‘আমাদের সম্মানের দিকে তাকিয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করিনি। তবে ওই দুজন এত অল্প বয়সে ভয়ংকর হয়ে উঠছে। এত অল্প বয়সে ওরা কীভাবে বাস চালাচ্ছে, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’

অপ্রাপ্ত বয়সে গাড়ি চালানো অপরাধ বলে জানান গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক এস এম রাশিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, যে পরিবহনের গাড়ির রুট পারমিট নেই, যারা অপ্রাপ্ত বয়সে গাড়ি চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।