বিজয়নগরে বিপণিবিতান নির্মাণে ভরাট করা পুকুরের মাটি অপসারণ শুরু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা-আখাউড়া সড়কের পাশে মির্জাপুর এলাকায় ৪০ বছরের বেশি পুরোনো পুকুরের ভরাটকাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসনফাইল ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বিপণিবিতান তৈরির জন্য চার দশকের পুরোনো একটি পুকুর ভরাট করছিলেন স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি। জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে পুকুরের ভরাটকাজ বন্ধ হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা থেকে পুকুরের মাটি অপসারণ শুরু করেছেন ভরাটকাজে জড়িত ব্যক্তিরা।

 গতকাল বুধবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‌‘বিজয়নগরে বিপণিবিতান নির্মাণে ভরাট হচ্ছে চার দশকের পুরোনো পুকুর’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে এলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান পুকুর ভরাটের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা থেকে এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে মাটি অপসারণ শুরু করেন ভরাটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। আজ সকালে মাটি অপসারণ করে পুকুরের দক্ষিণ পাশে একটি স মিলে নিয়ে রাখা হয়। তবে পুকুরের ভরাট করা অংশের সম্পূর্ণ মাটি এখনো অপসারণ করা হয়নি।

 বিজয়নগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদি হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ আসার পর মাটি অপসারণ করার জন্য তাঁদের নির্দেশনা দিয়েছি। তাঁরা নিজেরাই মাটি অপসারণ করছেন।’

 স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয়নগরের চান্দুরা-আখাউড়া সড়কে ইছাপুরা ইউনিয়নের মির্জাপুর মোড়ে রাস্তাসংলগ্ন পুকুরটি ৪০-৫০ বছরের পুরোনো। পুকুরের পূর্ব দিকের বাসিন্দা জলফু মিয়া, তাঁর ছোট ভাই আজিজুল হক ওরফে মলাই মিয়া, করিম মিয়াসহ কয়েকজন পুকুরটির ৭২ শতাংশের মালিক। সাড়ে তিন মাস আগে পুকুরটি ভরাট করতে পানি সরানো হয়। এরপর জলফু, মলাইসহ পাড়ের বাসিন্দারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি এনে ভরাটের কাজ শুরু করেন। পুকুরটি ভরাট করে সেখানে বিপণিবিতান নির্মাণ করা হবে বলে জানা গিয়েছিল।

আরও পড়ুন

প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী ও খাল ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অন্যদিকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের (২০১০ সালে সংশোধিত) ৬ ধারায় বলা হয়েছে, ‘বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না।’