সিলেটে তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে পরিবহনশ্রমিকদের বিক্ষোভ

সিলেট-জকিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রাখেন পরিবহনশ্রমিকরা। এ সময় সড়কের দুই পাশে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের গোলাপগঞ্জে প্রায় তিন ঘণ্টা সিলেট-জকিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত এক লেগুনাচালকের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের দাবিতে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি চলে। পরে পুলিশের সঙ্গে সমঝোতার পর পরিবহনশ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

পরিবহনশ্রমিকদের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সড়কের দুই পাশে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। অনেক যাত্রী যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে গোলাপগঞ্জ বাজার এলাকা পার হন।

স্থানীয় লোকজন ও পরিবহনশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর গোলাপগঞ্জের হেতিমগঞ্জ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ফখরুল ইসলাম (৪৩) নামের এক লেগুনাচালক আহত হন। পরে ওই লেগুনাচালক চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে গতকাল সোমবার রাতে মারা যান। নিহতের ভাই গোলাপগঞ্জের তুরুববাগ এলাকার বাসিন্দা মো. নাছির উদ্দিন বিনা ময়নাতদন্তে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আবেদন নিয়ে থানায় যান। তবে পুলিশ ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দেবে না বলে জানায়। এর জের ধরে গোলাপগঞ্জের বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসশ্রমিকেরা আজ দুপুর ১২টার দিকে গোলাপগঞ্জ বাজারে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় একাধিকবার পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাঁরা অবরোধ প্রত্যাহার করেননি।

নিহত ফখরুল ইসলামের স্ত্রী সোয়ারা আক্তার আজ বিকেলে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ হস্তান্তরের জন্য আবেদন করেছেন। বেলা তিনটার পর থেকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

গোলাপগঞ্জ মাইক্রোবাস শ্রমিক উপকমিটির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া জানান, নিহত লেগুনাচালকের পরিবারের পক্ষ থেকে মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে দেওয়ার জন্য আবেদন করেও পুলিশ নানা অজুহাত দেখিয়েছে। এর প্রতিবাদে তাঁরা সড়ক অবরোধ করেছেন।

এদিকে বেলা আড়াইটার দিকে পরিবহনশ্রমিকদের একদল প্রতিনিধি গোলাপগঞ্জ থানায় গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বেলা তিনটার দিকে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।

গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় এক পরিবহনশ্রমিক আহত হওয়ার বিষয়ে পুলিশের কাছে তথ্য ছিল না। গতকাল আহত ব্যক্তি মারা গেলে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। এরপর নিহতের বড় ভাই পরিচয়ে এক ব্যক্তি থানায় এসে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ নিতে চান। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নিয়ম অনুযায়ী নিহতের সবচেয়ে নিকটাত্মীয় স্ত্রীকে এ ব্যাপারে আবেদন করতে হবে অথবা ময়নাতদন্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হবে।

ওসি বলেন, এ ঘটনার জেরেই অবরোধ করেছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। পরবর্তী সময়ে নিহত ফখরুল ইসলামের স্ত্রী সোয়ারা আক্তার আজ বিকেলে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ হস্তান্তরের জন্য আবেদন করেছেন। আইনি পথেই লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বেলা তিনটার পর থেকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।