‘আমার মাসুম বাচ্চাগুলো এতিম হয়ে গেল। এখন ওদের কী হবে? আমি এর বিচার চাই। আমার ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’ আজ শুক্রবার মুঠোফোনে আলাপকালে এসব কথা বলেন কুমিল্লার তিতাস উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের কানাইনগর চকের বাড়ি এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত দোকানি মানিক মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা বেগম।
আক্ষেপ করে তাসলিমা আরও বলেন, ‘অবুঝ তিন শিশুর কী হবে? আমার কী হবে?’
বাকিতে সিগারেট না দেওয়ায় দোকানি মানিক মিয়া ছুরিকাঘাতে মারা যান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় তিতাস উপজেলার কানাইনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মানিক মিয়া তিতাস উপজেলার কানাইনগর গ্রামের মো. মোখলেছুর রহমানের ছেলে। নিহত মানিকের সংসারে স্ত্রী তাসলিমা বেগম, তিন ছেলে মুরসালিন মিয়া (৮), মুসা মিয়া (৬) ও তানজিল মিয়া (৪) আছে।
মানিক মিয়াকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে কানাইনগর গ্রামের বাহাউদ্দিনকে (৩০) আটক করা হয়েছে। তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কান্তি দাস বলেন, আজ সকালে পালিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার জগতপুর এলাকা থেকে বাহাউদ্দিনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরার চেষ্টা চলছে।
মানিকের বাবা মোখলেছুর রহমান জানান, গতকাল দুপুরে কানাইনগর গ্রামে মানিকের দোকানে একই গ্রামের বাহাউদ্দিন সিগারেটের জন্য যান। বাকিতে সিগারেট না দিতে চাওয়ার একপর্যায়ে মানিক ও বাহাউদ্দিনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। ওই সময় মানিকের দোকানে রেফ্রিজারেটরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়ে বাহাউদ্দিনের নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। পরে তিনি বাড়িতে এসে তাঁর ভাই জালালসহ তিন থেকে চারজনকে নিয়ে মানিকের দোকানে যান। এ সময় তাঁরা মানিকের ওপর হামলা চালান এবং মানিককে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে মানিককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই কর্তব্যরত চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করেন।
আজ বিকেলে মানিকের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা থেকে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গ্রামের বাড়িতে আসার কথা। এরপর লাশ দাফন করা হবে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা রয়েছে।