আলমডাঙ্গায় পাঁচ প্রার্থীর চারজনেরই পছন্দ আনারস প্রতীক, পরে লটারিতে নিষ্পত্তি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষেছবি: শাহ আলম

চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ২৭ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে দুটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দ দেন।

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে চারজনেরই পছন্দের প্রতীক ছিল আনারস। তাই পরে লটারির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করা হয়। সেই সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বী আট প্রার্থীর মধ্যে চারজন চশমা, তিনজন টিউবওয়েল প্রতীক চান। ফলে তাঁদের মধ্যেও লটারির মাধ্যমে প্রতীক চূড়ান্ত করা হয়।

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আইয়ুব হোসেন, জেলা কৃষক লীগের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে এম মঞ্জিলুর রহমান, ঢাকা মহানগরের দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মোমিন চৌধুরী ওরফে ডাবু চৌধুরী এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান।

পছন্দের প্রতীক হিসেবে জিল্লুর রহমান ঘোড়া দাবি করলে তাঁকে তা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে বাকিদের মধ্যে লটারিতে মোমিন চৌধুরী পছন্দের প্রতীক আনারস পান। পরে কে এম মঞ্জিলুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীক, আইয়ুব হোসেন দোয়াত কলম ও নুরুল ইসলাম কাপ-পিরিচ প্রতীক পছন্দ করে নেন।

আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী আট প্রার্থীর মধ্যে চারজনের পছন্দের প্রতীক চশমা। এর মধ্যে মো. মিজানুর রহমান লটারিতে জয়ী হয়ে পছন্দের প্রতীক চশমা পেয়ে যান। বাকি তিনজনের মধ্যে আহমেদ হাসিব খান তালা প্রতীক, মো. আজিজুল হক উড়োজাহাজ প্রতীক ও মো. মাসুম বিল্লাহ মাইক প্রতীক বেছে নেন। এ ছাড়া বাকি চারজনের মধ্যে মো. সোহেল রানা (শাহীন) পালকি প্রতীক পছন্দ করে নিলেও তিনজন তাঁদের পছন্দের প্রতীক হিসেবে টিউবওয়েল চান। পরে লটারিতে মো. মকলেছুর রহমান টিউবওয়েল পান। মামুনার রহমান বই প্রতীক ও মো. আজিজুল হক টিয়া পাখি প্রতীক বেছে নেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু হাঁস প্রতীক, মনিরা খাতুন কলস প্রতীক ও মোছা. কাজল রেখা ফুটবল প্রতীক পেয়েছেন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজনের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আসাদুল হক বিশ্বাস ও জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক পছন্দের প্রতীক হিসেবে আনারস দাবি করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা দুই প্রার্থীকে লটারির মাধ্যমে সমঝোতার বিষয়টি মনে করিয়ে দিলে মো. আজিজুল হক মোটরসাইকেল প্রতীক বেছে নেন। এরপর মো. আসাদুল হক বিশ্বাস আনারস প্রতীক এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার পছন্দের ঘোড়া প্রতীক বরাদ্দ পান।

সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচজনের মধ্যে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান টিউবওয়েল, শামীম হোসেন মাইক ও হাফিজুর রহমান পছন্দের প্রতীক চশমা বরাদ্দ পান। তবে অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মামুনুর রশীদ ও মিরাজুল ইসলাম উড়োজাহাজ প্রতীক দাবি করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা সমঝোতার সুযোগ দিলে মামুনুর রশিদ তালা প্রতীক বেছে দেন। পরে উড়োজাহাজ প্রতীক নিতে রাজি হন মিরাজুল ইসলাম। এই উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদী কলস প্রতীক, নুরুন্নাহার হাঁস প্রতীক ও মাসুমা খাতুনকে পছন্দের প্রতীক ফুটবল দেওয়া হয়েছে।

প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠানে রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা তুজ জোহরা, আলমডাঙ্গার ইউএনও স্নিগ্ধা দাস, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাহুল রায় ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। কর্মকর্তারা প্রার্থীদের নির্বাচন আচরণবিধি পুরোপুরিভাবে প্রতিপালনের আহ্বান জানান। অন্যথায় জেল ও জরিমানা, এমনকি প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে বলে সবাইকে সতর্ক করেন।

২১ মে চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।