ভারতের আমদানি বিধিনিষেধকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ বলছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
স্থলপথে বাংলাদেশি কিছু পণ্য আমদানিতে ভারতের বিধিনিষেধের কারণে ব্যবসায়ীদের সাময়িক ক্ষতি হলেও দীর্ঘ মেয়াদে এটি আত্মনির্ভরশীলতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ বলে মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। মঙ্গলবার দুপুরে সাভারের জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে যুব সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয় বলেছেন, “এই নিষেধাজ্ঞায় আমাদের থেকে বেশি ভারতেরই ক্ষতি হবে।” কারণ, ভারত বাংলাদেশে বেশি রপ্তানি করে থাকে। তবে অবশ্যই যেহেতু এটা হঠাৎ সিদ্ধান্ত এসেছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে হবে এবং সেই বিকল্প ব্যবস্থা খোঁজা পর্যন্ত কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকবে। ব্যবসায়ীদের সাময়িক হয়তো কিছু ক্ষতি হবে, তবে দীর্ঘ মেয়াদে আমরা মনে করি, এটি আমাদের আত্মনির্ভরশীলতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটা সুযোগ।’
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যখন সরকার কাজ করে, তখন একটা বডি হিসেবে কাজ করে। কারও ব্যক্তিগতভাবে এখানে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। বিশেষ করে এ ধরনের বড় ডিসিশন, একা ব্যক্তি হিসেবে আমি নিচ্ছি, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। আর যেহেতু এখানে আইনি জটিলতা আছে এবং আদালতের বিচারাধীন বিষয়, এখানে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে লাভ নেই।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘যে বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন চলছে, সেটির যে মামলা ছিল, সেই মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ পক্ষভুক্ত ছিল না এবং রায়েও স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনা ছিল না। যেহেতু নানা ধরনের আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে, মেয়াদসংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হয়েছে। জটিলতাগুলো নিরসনে আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি, একটি রিট পিটিশন হয়েছে। আমরা লিগ্যাল নোটিশও পেয়েছি, ওই রিট পিটিশনের শুনানি আজকে হওয়ার কথা। তো একদিকে বিচারাধীন, আরেক দিকে যেসব আইনি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোর সমাধান হলেই আমরা কোনো একটা সিদ্ধান্ত দিতে পারব।’
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করছেন—এ ব্যাপারে সরকারের কোনো ব্যর্থতা আছে কি না, প্রশ্ন করলে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ সংগঠন। নিষিদ্ধ সংগঠনের সভা–সমাবেশসহ সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। আশা করছি, তারা এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির আয়োজনে যুব সমাবেশ ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা।
সমাবেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি ঐতিহাসিক পটপরিবর্তন এবং জনগণকে নতুন স্বপ্ন দেখানোর ক্ষেত্রে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান একটি বড় উদাহরণ। এ গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তরুণেরা শুধু স্বৈরশাসকের পরিবর্তন চায়নি, চেয়েছে দেশের একটি গুণগত পরিবর্তন, রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানের ইতিবাচক সংস্কার।’
জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মহা. বশিরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বক্তব্য দেন।