কেরানীগঞ্জে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ মায়ের পর মেয়েরও মৃত্যু

রান্নাঘরে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে ধসে গেছে বাড়ির দেয়াল। সোমবার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কাটুরাইল ঋষিপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছবি: প্রথম আলো

ঢাকার কেরানীগঞ্জে মাদকসেবী ছেলের দেওয়া আগুন থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মায়ের মৃত্যুর পর মেয়েরও মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই মেয়ে মারা যান।

মারা যাওয়া নারীর নাম বীণা চক্রবর্তী (৪০)। বিস্ফোরণে তাঁর শরীরের ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এর আগে গত সোমবার রাতে বীণা চক্রবর্তীর মা উমা রানী (৬০) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত বীণা চক্রবর্তীর ছেলে পিনাক চক্রবর্তী (১৫) ও উমা রানীর ছেলে (আগুন সংযোগকারী) দেবা চক্রবর্তী (২৮) আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় আহত প্রতিবেশী লিপি চক্রবর্তী (৩০) ও পথচারী স্বপন রাজবংশী (৫৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আরও পড়ুন

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, বীণা চক্রবর্তীর শরীরের ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গত সোমবার রাতে তাঁর মা উমা রানী মারা যান। এ ছাড়া পিনাকের শরীরের ২৪ শতাংশ ও দেবা চক্রবর্তীর শরীরের ১৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

১৮ ডিসেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কাওটাইল এলাকায় একটি চারতলা ভবনের নিচতলায় রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডারে মাদকসেবী ছেলের দেওয়া আগুন থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে একই পরিবারের চারজনসহ ১০ জন দগ্ধ ও আহত হয়েছিলেন।

ঘটনার পর নিহত উমা রানীর স্বামী বিমল ঠাকুর বলেছিলেন, ‘আমার পোলা দেবা নেশাখোর। ওই সব সময়ই আমার আর তার মায়ের কাছ থেইক্যা নিশার লাইগ্যা টাকা নিত। যখন না দিতাম, তখন আমাগো মারধর করত। পোলায় কামের কথা কইয়া এক লাখ টাকা চায়। সেই টাকা না দিলে তার মা, বোন ও পরিবারের লোকজনগো ডাইক্যা আইনা বলে, ‘অহন টাকা দিবি, নইলে তগো সবাইরে শেষ কইরা দিমু।’ এই কথা বইলা দেবা গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরাইয়া দেয়। এতে গ্যাস সিলিন্ডার বাস্ট (বিস্ফোরণ) হয়ে আমার বউ, নাতনি, মাইয়াসহ পাঁচজন আগুনে পুইড়া যায়। ভগবান ডাক দিবার আগেই নিশাখোর পোলাডা তার মায়রে (উমা রানী) চিতায় পাঠাইল।’

আরও পড়ুন