দুর্ঘটনায় আহত শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে হামলা, চিকিৎসক আহত

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে ইজিবাইকের (টমটম) ধাক্কায় আহত এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা করেছেন নিহত শিশুর স্বজনেরা। এ সময় তাঁরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালান। পাশাপাশি এক চিকিৎসকসহ হাসপাতালের তিন কর্মকর্তা–কর্মচারীকে মারধর করেন। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়।

নিহত শিশুর নাম মোহাম্মদ ছিদ্দিক (৭)। সে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিলা এলাকার আবদুল জব্বারের ছেলে। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে শিশুর স্বজনেরা জরুরি বিভাগে হামলা করেছিলেন। এতে চিকিৎসক ইনজামামুল হক, উপসহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন ও কর্মচারী মোহাম্মদ আলম আহত হন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় রুদ্র।

এ বিষয়ে প্রণয় রুদ্র বলেন, ইজিবাইকের ধাক্কায় মোহাম্মদ ছিদ্দিক নামের এক শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। আহত শিশুকে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু স্বজনেরা তাকে কক্সবাজার না নিয়ে বাড়ি নিয়ে গেলে সেখানে সন্ধ্যার পরে শিশুটি মারা যায়। পরে শিশুর স্বজনেরা এসে হাসপাতালে হামলা চালান। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে জেলা সিভিল সার্জনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য বলা হয়েছে।

নিহত শিশুর বাবা আবদুল জব্বার বলেন, ইজিবাইকের ধাক্কায় মোহাম্মদ ছিদ্দিক মাথায় আঘাত পেলে তাকে টেকনাফ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন তাঁরা। দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে দেন। কিন্তু তাঁরা বিষয়টি বুঝতে না পেরে তাকে বাড়ি নিয়ে যান। এরপর সন্ধ্যার দিকে শিশুটি কয়েকবার বমি করে। পরে হাসপাতালে আনার আগেই মারা যায়। এতে তার আত্মীয়স্বজন ভুল চিকিৎসা কারণে ছিদ্দিকের মৃত্যু হয়ে বলে বলে ধারণা করেন। ক্ষোভ থেকে তাঁরা হাসপাতালে হামলা চালান।

ঘটনার পরে রাতেই এ বিষয়ে নিহত শিশুর স্বজনদের নিয়ে বৈঠকে করেছেন টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় রুদ্র, আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) এনামুল হক, টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী বলেন, শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার স্বজনেরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হামলা চালান। পরে বিষয়টি বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। নিহত শিশুর অভিভাবকেরা নিজেদের ভুল শিকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।