সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের

খুলনা জেলার মানচিত্র

তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা। ওই কর্মসূচি অনুযায়ী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা নগরের খালিশপুরে ট্যাংকলরি ভবনে আয়োজিত এক সভা থেকে ওই ঘোষণা দেওয়া হয়।

জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের দাবিগুলো হলো জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির অর্থনৈতিক জীবনকাল ৫০ বছর করা, জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট বিধায় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সুস্পষ্ট প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা।

গত ২৪ জুলাই ঢাকায় এক সভা থেকে ওই তিন দফা দাবি ঘোষণা করেছিলেন জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা। দাবি বাস্তবায়নে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নেওয়ায় ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে যাওয়ার ঘোষণা দেন তাঁরা।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজকের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি অংশ নেয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগীয় সভাপতি আবদুল গফ্‌ফার বিশ্বাস। সভায় জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম মোড়ল আবদুস সোবহান, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম মাহবুব আলম, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মীর মোকছেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. আলী আজিম, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, পেট্রলপাম্প মালিক সমিতির নেতা মো. মুরাদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস মুঠোফোন প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকার তাঁদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। এ কারণে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ থাকবে। চার বছর ধরে একই এবং যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা (সরকারি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা) চার বছর ধরে কয়েকবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন,  প্রতিবারই সময় নিয়েছেন কিন্তু তাঁদের দাবি বাস্তবায়ন করেননি। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের কর্মসূচি ঘোষণা দিতে হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
সভায় শ্রমিকনেতারা জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। মালিকদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তাঁরা।