বান্দরবানে প্রান্তিক লেকে কখন যাবেন, কীভাবে যাবেন
প্রান্তিক লেকের অবস্থান বান্দরবান ও চট্টগ্রাম জেলার মাঝামাঝি। প্রান্তবর্তী হওয়ায় লেকের নাম হয়েছে প্রান্তিক লেক। লেকের পূর্ব তীর বান্দরবান ও পশ্চিম পাশে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া। সাতকানিয়া সীমানার একটি ছড়ায় বাঁধ নির্মাণ করে এই লেক বা হ্রদের সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রায় ২৫ একর আয়তনের লেকের দুই ধারে ৬৫ একরের বেশি এলাকাজুড়ে বনাঞ্চল। নিসর্গের সঙ্গে মানুষের মেলবন্ধন দেখা যাবে এখানে এলে। শিশু-কিশোরসহ পরিবার নিয়ে সারা দিন কাটিয়ে দেওয়া যায়।
পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে নীল জলরাশির শান্ত সমাহিত সৌন্দর্য। বান্দরবানের প্রান্তিক লেকের এমন নিসর্গ শোভা মুগ্ধ করবে ভ্রমণপিপাসু মানুষজনকে। গাছের ছায়াঘেরা ও পাখপাখালির কলকাকলিতে মুখর এই লেকের পাড়ে বিনোদনের সব সুবিধাই রয়েছে। জেলা শহরের খুব কাছেই অবস্থান এই লেকের। কিন্তু লেকটি এখনো খুব বেশি মানুষের কাছে পরিচিত নয়। তাই পর্যটকের আনাগোনাও কম।
প্রান্তিক লেকের অবস্থান বান্দরবান ও চট্টগ্রাম জেলার মাঝামাঝি। প্রান্তবর্তী হওয়ায় লেকের নাম হয়েছে প্রান্তিক লেক। লেকের পূর্ব তীর বান্দরবান ও পশ্চিম পাশে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া। সাতকানিয়া সীমানার একটি ছড়ায় বাঁধ নির্মাণ করে এই লেক বা হ্রদের সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রায় ২৫ একর আয়তনের লেকের দুই ধারে ৬৫ একরের বেশি এলাকাজুড়ে বনাঞ্চল। নিসর্গের সঙ্গে মানুষের মেলবন্ধন দেখা যাবে এখানে এলে। শিশু-কিশোরসহ পরিবার নিয়ে সারা দিন কাটিয়ে দেওয়া যায়। বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কে জেলা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হলুদিয়া বাজার এবং সেখান থেকে তিন কিলোমিটার গেলে প্রান্তিক লেক। শুধু প্রান্তিক লেকে সময় কাটাতে চাইলে বান্দরবান জেলা শহরে না গিয়ে হলুদিয়া-প্রান্তিক লেক সড়ক ধরে গেলে সহজে যাওয়া সম্ভব। বান্দরবানে ভ্রমণ শেষে ফেরার পথেও ‘সব ভালো যার শেষ ভালো’ হিসেবে প্রান্তিক লেকে সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
অপরূপ রূপে সাজানো পর্যটন আকর্ষণ প্রান্তিক লেক পরিচালনা করে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। নীল জলের লেকের দুই তীরে প্রাকৃতিক বন যেমন রয়েছে, তেমনি বনায়নও করা হয়েছে। গাছগাছালির ছায়াতলে, পাখপাখালির কলকাকলিতে ও মৃদু হাওয়ার মায়াময় পরিবেশে লেকের ধারে ঘুরে বেড়ানো যায়। ইচ্ছে হলে লেকে সাঁতার কাটা, নৌকায় বেড়ানো যেতে পারে। কারও বড়শিতে মাছ ধরার শখ থাকলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তা–ও করা যায়। জেলা প্রশাসনে নিয়োজিত কর্মচারী কনক দাশ বলেন, লেকে চারটি কায়াকিং বোট, একটি করে প্যাডেল ও সোলার বোট রয়েছে। এই বোটে ইচ্ছেমতো লেকের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ভ্রমণ করতে কোনো বাধা নেই। তবে লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নিতে হবে।
বনের মধ্যে গাছের ডালে ডালে চড়ে বেড়ানোর জন্য রয়েছে ট্রি টপ অবস্ট্রাকল (টিটিও)। সিঁড়ি বেয়ে টিটিও রাইডিংয়ে উঠে এ গাছ থেকে ও গাছে নিরাপদে চলাচল করা যায়। বিশাল লেকের দুই পাড়ে পারাপারের জন্য একটি জিপলাইন রয়েছে। ছায়া সুশীতল পরিবেশে একটি মিনিপার্কে শিশু-কিশোরেরা সময় কাটাতে পারে।
প্রান্তিক লেকে সম্প্রতি চট্টগ্রাম থেকে ঘুরতে আসা হিমেল বড়ুয়া ও এমি বড়ুয়া নামে এক নবদম্পতির সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের ভাষায় ‘প্রান্তিক লেকে সারা দিন ঘুরে বেড়ালেও ক্লান্তিবোধের কোনো অবকাশ নেই। এখানে মানুষের তৈরি ও নিসর্গ প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর সবকিছু আছে’। বগুড়া থেকে ৪০ জনের একটি দলের সঙ্গে আসা নিজামুল ইসলাম জানালেন, প্রান্তিক লেকের সৌন্দর্য সম্পর্কে শুনেছেন। এ জন্য আগে প্রান্তিক লেকে ঘুরে বান্দরবান জেলা শহরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এসে সৌন্দর্য দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গেছে।
আশপাশের লোকজন জানালেন, বনভোজন আয়োজনের মাধ্যমে সারা দিন কাটানোর সবচেয়ে ভালো জায়গা প্রান্তিক লেক। এখানে রান্নাবান্না করার সুযোগ যেমন আছে, তেমনি পানিরও কোনো অভাব নেই। আগে পর্যটনের মৌসুমে প্রতিদিন বনভোজনের দল থাকত। কিন্তু কয়েক বছর ধরে বনভোজন কমে গেছে। কেন কমে গেছে জানতে চাইলে দেখভালের দায়িত্বে থাকা কনক দাশ বলেছেন, প্রান্তিক লেক নিয়ে বাইরের মানুষ কম জানে। জেলা শহরের কাছে এবং ভাড়া কম হওয়ায় যানবাহনের চালকেরা পর্যটকদের নিয়ে আসতে চান না। তবে দূরের লোকজন কম হলেও সাতকানিয়া, লোহাগাড়া থেকে প্রচুর লোকজন এসে সময় কাটায়।
জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আসিফ রায়হান জানিয়েছেন, আগে প্রান্তিক লেকে সুযোগ-সুবিধা কম ছিল। এখন বিনোদনের উপকরণসহ বনভোজনের জন্য সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। লোকজনও আসছেন। ধীরে ধীরে পরিচিত হয়ে উঠছে পর্যটন–গন্তব্য হিসেবে।