যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামী ও শাশুড়িকে যাবজ্জীবন

আদালতের রায়
প্রতীকী ছবি

যৌতুকের জন্য এক নারীকে হত্যার দায়ে তাঁর স্বামী ও শাশুড়িকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাঁদের ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। আজ রোববার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ আদেশ দেন। ১২ বছর পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

সাজা পাওয়া দুজন হলেন দুলাল চন্দ্র মহন্ত (৫২) ও তাঁর মা গীতা রানী মহন্ত (৭২)। দুলাল চন্দ্র সিংড়া উপজেলার পাকুড়িয়া কালাইকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে বিচারক রায় দেন। পরে তাঁদের নাটোর কারাগারে পাঠানো হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ মামলার দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন দুলালের বাবা শচীন চন্দ্র মহন্ত ও ভাই গোপীনাথ চন্দ্র মহন্ত।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলার নন্দিগ্রাম উপজেলার থালতা গ্রামের তপন চন্দ্র মহন্তের মেয়ে রুবী রানী মহন্তের সঙ্গে প্রায় ২৩ বছর আগে আসামি দুলালের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও তাঁর স্বজনেরা রুবীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।

২০১১ সালের ১৪ মার্চ রুবীর বাবা তপন চন্দ্র মহন্তকে তাঁরা বাড়িতে ডাকেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তপনের কাছে তাঁরা যৌতুক দাবি করেন। তিনি যৌতুক দিতে অপারগতা জানালে আসামিরা তাঁর সামনেই তাঁর মেয়ে রুবীকে মারধর করেন। তপন ঘর থেকে বের হয়ে চিৎকার করে আশপাশের লোকজন ডাকাডাকি করেন। পরে আসামিরা রুবীর মুখে বিষ ঢেলে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় তপন চন্দ্র বাদী হয়ে সিংড়া থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ চার আসামির বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

আজ এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। জরিমানার টাকা নিহত রুবীর মা-বাবাকে দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান বলেন, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। এ রায় যৌতুকের সমস্যা দূর করতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।