পাবনায় অশ্লীল ছবির সঙ্গে নারীদের ছবি লাগিয়ে ফেসবুকে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৪

সংবাদ সম্মেলন করে প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানায় পাবনা জেলা পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার কার্যালয়েছবি: হাসান মাহমুদ

পাবনায় অশ্লীল ছবির সঙ্গে নারীদের ছবি লাগিয়ে টাকা চাইত একটি প্রতারক চক্র। টাকা না দিলে সেই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিত চক্রটি। পাবনা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গতকাল শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রটির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এসব কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত কম্পিউটার ও বেশ কয়েকটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন পাবনা সদর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের ইশতিয়াক আহমেদ (১৮), জেলা শহরের রাধানগর মহল্লার মো. ইমন আহাম্মেদ (২০), শালগাড়িয়া মহল্লার মো. হাসিবুল হাসান তন্ময় (২২) ও বিলভাদুরিয়া এলাকার ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আকবর আলী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে স্কুল-কলেজে পড়া মেয়েশিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছিল। তাদের পরিবারের সদস্যরা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বেশ কিছু অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তাঁরা জানিয়েছেন, অশ্লীল ছবির সঙ্গে মেয়েদের ছবি জুড়ে দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে ফেসবুক থেকে সেসব ছবি ডিলিট করার জন্য পেজ অ্যাডমিনরা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা দাবি করছে। তাদের দাবিমতো টাকা না দিলে আরও আপত্তিকর ছবি পোস্ট করার হুমকি দিত। এমন অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ অভিযানে নামে। অভিযানে প্রথমে ইশতিয়াক আহমেদকে আটক করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, চারজনকে আটকের পর তাঁদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়। সেই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে। পাবনায় এসব সাইবার অপরাধীদের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে কোনো কোনো ভুক্তভোগী সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন মনে করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। অনেকের সংসার ভেঙে যাচ্ছে। এ বিষয়ে গুরুত্ব অনুধাবন করে বেশ কিছুদিন ধরেই ডিবি পুলিশ কাজ করে যাচ্ছিল। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জিয়াউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ডি এম হাসিবুলসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এসব অপরাধী গণপ্রযুক্তিবিদ্যায় অত্যধিক পারদর্শী ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত। গ্রেপ্তার আসামিদের বাইরে আরও বেশ কিছু গ্রুপের অ্যাডমিন রয়েছে, যারা প্রতিনিয়ত সাইবার বুলিং করে যাচ্ছে। তারা সবাই পুলিশের নজরদারিতে আছে। যে বা যারাই সাইবার ক্রাইম বা সাইবার বুলিংয়ে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের সবার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।