খুলনার কয়রা উপজেলার কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনে গেলে সারি সারি জব্দ নৌকা দেখে যে কারও চোখ আটকে যাবে। তবে অনেক দিন পড়ে থাকতে থাকতে বেশির ভাগ নৌকাই নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া খুলনা রেঞ্জের বজবজ টহল ফাঁড়ি, হড্ডা টহল ফাঁড়ি, শাকবাড়িয়া টহল ফাঁড়ি, কাগাদোবেকি ফরেস্ট স্টেশন, গেওয়াখালী ফরেস্ট স্টেশন, নীলকমল ফরেস্ট স্টেশন, চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী, জিউধরা, শরণখোলার বগি, সুপাতি ও দুবলা ফরেস্ট স্টেশনেও এ রকম জব্দ করা হাজারো নৌকা রয়েছে।

সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, সুন্দরবনের নদ-নদী ও খাল থেকে মাছ, কাঁকড়া, গোলপাতা ও মধু সংগ্রহ করেন বনজীবীরা। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পাস না নিয়ে অবৈধভাবে নৌকা নিয়ে বনে প্রবেশ করেন। তাঁদের আটক করে বন বিভাগ। আটকের পর কিছু নৌকার তলা নষ্ট করে দেওয়া হয়, যাতে এ নৌকা নিয়ে আবার অবৈধ প্রবেশ করতে না পারে। আবার অনেক সময় নৌকা ফেলে পালিয়ে যায় অপরাধীরা। জব্দ করা নৌকাগুলো এনে রাখা হয় নিকটতম টহল ফাঁড়ি ও ফরেস্ট স্টেশনে।

সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রা উপজেলার সুতিয়া বাজার এলাকার রুহুল আমিন বলেন, সুন্দরবনে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারীদের নৌকা, জাল বিভিন্ন সময় আটক করে বন বিভাগ। সেগুলো যেসব স্টেশনে রাখা হয়, সেখানেই নষ্ট হয়। সবচেয়ে বেশি নৌকা আটক রয়েছে কয়রার কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনে।

কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামাপ্রসাদ রায় বলেন, ‘আমার আওতাধীন সুন্দরবনের একটি স্টেশন ও চারটি টহল ফাঁড়িতে আড়াই শর মতো জব্দ নৌকা রয়েছে। এসব নৌকা এখন বনরক্ষীদের কাছে অনেকটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আটক হওয়া নৌকাগুলো যাঁদের, তারা এগুলো নেওয়ার উদ্যোগও নেন না। সরকারিভাবে নিলামেরও ব্যবস্থা করা হয় না। এ কারণে এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুন্দরবনে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকে যেসব নৌকা ও ট্রলার জব্দ করা হয়, তা স্টেশনগুলোতে রাখা হয়। ট্রলারগুলোর মামলা নিষ্পত্তি হলে মালিক নিয়ে যান। কিন্তু নৌকা নিতে কেউ আসেন না। এ কারণে নৌকাগুলো স্টেশনেই নষ্ট হয়ে যায়। আবার নৌকাগুলো নিলামে বিক্রি করলে অনেকে কম দামে কিনে তা আবার চোরাচালান কাজে ব্যবহার করতে পারে। এ কারণে নিলামে বিক্রি করা হচ্ছে না।’