বছরের প্রথম সূর্যোদয় পর্যবেক্ষণ চিলমারীর শাখাহাতির দ্বীপ চরে
বছরের প্রথম সূর্যোদয় পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবছর ‘সূর্য উৎসব’ আয়োজন করে থাকে। বিগত বছরগুলোতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সেন্ট মার্টিন, সুন্দরবন, কেওক্রাডং, বিরিশিরি, টাঙ্গুয়ার হাওর, তেঁতুলিয়া, নিঝুম দ্বীপ, রাঙামাটির পাবলাখালী বনাঞ্চল, খাগড়াছড়ির হাতিমাথা পার্বত্য অঞ্চলসহ নানা জায়গায় এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছিল। এ বছর সূর্য উৎসবের ২৩তম আসর বসেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত শাখাহাতির দ্বীপ চরে।
৩০ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই উৎসবের বিভিন্ন আয়োজন থাকছে। উৎসবে যোগ দিতে আজ শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামে এসেছেন। অংশগ্রহণকারী সদস্যদের মধ্যে সংগঠনের সভাপতি মশহুরুল আমিন, কবি-সাহিত্যিক, বিজ্ঞানকর্মী, প্রকৃতিবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মী রয়েছেন। চিলমারী উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে চ্যানেল আই ও প্রথম আলো।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ২০০১ সাল থেকে নিয়মিতভাবে সূর্য উৎসবের আয়োজন করে আসছে।
ঢাকায় বাংলাদেশের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করলেও ২০০১ সাল থেকে নিয়মিতভাবে তাঁরা সূর্য উৎসবের আয়োজন করে আসছেন। সংগঠনের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সামিউল ইসলাম বলেন, ‘বিজ্ঞানের জ্ঞান সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আমরা প্রতিবছর এই সূর্য উৎসবের আয়োজন করে থাকি। এবারে সূর্য উৎসব উদ্যাপনের পাশাপাশি কুড়িগ্রাম জেলাকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই। ঢাকা থেকে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ১৬ সদস্যের বিজ্ঞান কর্মী কুড়িগ্রামে এসেছি। রোববার চিলমারী উপজেলার ১৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ছোটদের বিজ্ঞান উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।’
সূর্য উৎসবে থাকছে ছোটদের বিজ্ঞান উৎসব, বিজ্ঞানবিষয়ক আলোচনা, অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্প, টেলিস্কোপে রাতের আকাশ দেখা, তাঁবুবাস, ব্রহ্মপুত্র চর থেকে টেলিস্কোপে নতুন বছরের প্রথম সূর্য দেখা এবং প্রতি সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক আড্ডা ও ক্যাম্পফায়ার।
এবারের সূর্য উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত ‘ছোটদের বিজ্ঞান উৎসবে’ চিলমারী উপজেলার ১৫০ জন শিক্ষার্থী রকেটের মডেল তৈরির কর্মশালা, বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞানবিষয়ক ছবি আঁকা, বিজ্ঞান আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং টেলিস্কোপে আকাশ দেখায় অংশ নেবে। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় যে কেউ এই সূর্য উৎসবে যোগ দিতে পারবেন।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্যতিক্রমী ও সৃজনশীল এই আয়োজনের মাধ্যমে চিলমারীকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার জন্য আয়োজক কমিটির সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এবং সব মিডিয়া পার্টনারের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছেন।