টেকনাফে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরেছে ৪ অপহৃত, উদ্ধারের দাবি পুলিশের

টেকনাফে অপহরণের পর মুক্তি পাওয়া চার কিশোর-তরুণ। গতকাল রাতেছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলার পাহাড়ি এলাকায় ফসলের খেত পাহারা দেওয়ার সময় অপহরণের শিকার দুই কিশোরসহ পাঁচজনের মধ্যে চারজন মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়া পেয়েছেন। এরা হলেন মোহাম্মদ শামীম (১৮), মোহাম্মদ রফিক (১৮), কিশোর আবদুর রহিম (১৩) ও মো. জিহান (১৭)। তাঁরা সবাই হ্নীলার পশ্চিম পানখালী গ্রামের বাসিন্দা। তবে মোহাম্মদ নুর (২২) নামের একজনকে এখনো আটকে রেখেছে অপহরণকারীরা।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অপহৃত ব্যক্তিদের ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি।

গত বৃহস্পতিবার ভোরে হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী পাহাড়ি এলাকা থেকে তাঁরা অপহৃত হন। অপহৃত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অপহরণকারীরা পাঁচজনের মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেছিল। মুক্তিপণ আদায় না করলে অপহৃত ব্যক্তিদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

অপহৃত ব্যক্তিদের মধ্যে এক কিশোরের মা প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণের দিন সন্ধ্যায় এক ব্যক্তি মুঠোফোনে কল দিয়ে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এর মধ্যে মোহাম্মদ নুরের জন্য ১৫ লাখ এবং বাকিদের জন্য আরও ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে অপহৃত ব্যক্তিদের স্বজনেরা নানাভাবে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই চারজনের জন্য ১ লাখ ২০ টাকা মুক্তিপণ দেন। তবে শুরু থেকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা মোহাম্মদ নুরকে ছেড়ে দেয়নি অপহরণকারীরা।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, মুক্তিপণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের অপহরণ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোরে পাঁচজনকে অপহরণ করে গহিন পাহাড়ের দিকে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা।

জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, ‘অপহরণের পর থেকে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করার জন্য অভিযান পরিচালনা করে আসছিল। অভিযানের ফল হিসেবে তাদের ছেড়ে দিয়ে বাধ্য হয়েছে বলে মনে করি। মুক্তিপণে বিষয়ে পুলিশ জানে না।’

গত ১২ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০৭ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৭ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫১ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।