একের পর এক নির্বাচনে রংপুরে ধরাশায়ী জাতীয় পার্টি, হতাশায় নেতা–কর্মীরা

জাতীয় পার্টি

উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপেও রংপুরে জাতীয় পার্টি নির্বাচনী বৈতরণী সফলভাবে পার হতে পারল না। দলটির সবচেয়ে বড় ঘাঁটি বিবেচনা করা হয় রংপুরকে। সেখানে পীরগঞ্জ উপজেলায় এবারও দলের প্রার্থী ধরাশায়ী হয়েছেন। ফলে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। এর আগে প্রথম ধাপের ভোটে পীরগাছা উপজেলাতেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন।

পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন তিনজন। তাঁদের মধ্যে দুজন আওয়ামী লীগের, একজন জাতীয় পার্টির। তিনজনের মধ্যে তৃতীয় হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নূর আলম মিয়া। এখানে বিজয়ী প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নূর মোহাম্মদ মন্ডল (আনারস)। তিনি ভোট পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৫১৩টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোকাররম হোসেন চৌধুরী (ঘোড়া)। তিনি ভোট পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৬৮১। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও দলটির উপজেলা সভাপতি নূর আলম মিয়া দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩৮৪ ভোট। অর্থাৎ বিজয়ী প্রার্থী তাঁর প্রায় তিন গুণ ভোট পেয়েছেন।

প্রথম ধাপে পীরগাছা উপজেলায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমানের পরাজয়ের পর পীরগঞ্জেও দলের প্রার্থীর শোচনীয় হারের বিষয়টি নেতা-কর্মীদের ভাবিয়ে তুলেছে। দলের সাংগঠনিক অবস্থাও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীরা।

পীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির একজন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এই ভোট প্রমাণ করে দিচ্ছে, আগের মতো মানুষের মধ্যে আর লাঙ্গলপ্রীতি নেই। দলের প্রয়াত চেয়ারম্যান এরশাদের আবেগ দিয়ে এ অঞ্চলে আর রাজনীতি চলবে না। দলের সাংগঠনিক অবস্থাও ভেঙে পড়েছে। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও আসতে পারেননি জাতীয় পার্টির প্রার্থী।

লাঙ্গল প্রতীকে উপজেলা জাতীয় পার্টির প্রার্থী নূর আলম মিয়ার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক বলেন, পরাজয় হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় ছিল জাতীয় পার্টি। এখনো এ অঞ্চলে জাতীয় পার্টির অবস্থা ভালো। তবে পরপর দুটি উপজেলায় প্রার্থীর পরাজয় দলের নেতা-কর্মীদের ভাবিয়ে তুলেছে, এ কথা ঠিক। এখন নতুন করে দলের কার্যক্রম এবং সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপে জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলেন না। সেখানে আওয়ামী লীগের নতুন মুখ, দলটির উপজেলা কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান (হেলিকপ্টার) বিজয়ী হয়েছেন।

এখন তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন রংপুরের জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা। রংপুর সদর ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় জাতীয় পার্টির দুজন প্রার্থী দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন সদর উপজেলায় মাসুদ নবী মুন্না ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় মোস্তাফিজার রহমান।