জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচল করা মৌমিতা পরিবহনের ১৭টি বাস আটক করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল থেকে মহাসড়কসংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে গিয়ে বাসগুলো আটকাতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
হেনস্তার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক প্রক্টর অধ্যাপক মো. আলমগীর কবিরের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ৫১তম ব্যাচের ওই নারী শিক্ষার্থী। এ সময় ওই ছাত্রীর বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ও তিনজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। প্রক্টর বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন।
ওই নারী শিক্ষার্থীর সহপাঠী ও প্রক্টরের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ওই ছাত্রী সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকা থেকে টিউশন শেষে মৌমিতা পরিবহনে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। এ সময় ভাড়া হিসেবে ১০০ টাকার একটি নোট দেন তিনি। বাসচালকের সহযোগী জানান, তাঁর কাছে ভাঙতি নেই, পরে দেবেন। পরবর্তী সময়ে সাভারের রেডিও কলোনি এলাকায় এসে বাসটি থেমে যায় এবং যাত্রীদের জানানো হয়, বাস আর সামনে যাবে না, সবাইকে নেমে যেতে হবে। তখন ওই ছাত্রী তাঁর বাকি টাকা ফেরত চাইলে বাসের সহযোগী তাঁর সঙ্গে খারাপ ভাষায় কথা বলেন এবং বাজে ইঙ্গিত দেন। ইতিমধ্যে বাসের চালক ওই ছাত্রীকে একা বাসে রেখেই বাস চালাতে শুরু করলে ছাত্রী ভয়ে বাস থেকে ঝাঁপ দেন এবং পায়ে আঘাত পান। পরে ক্যাম্পাসে ফিরে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নেন।
ওই নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ঘটনার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতার কথা জানান তিনি।
আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচাগামী লেনে মৌমিতা পরিবহনের ১৭টি বাস দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বাসের চালক ও সহযোগীরা বাসের মধ্যে কেউ বসে আছেন, কেউ শুয়ে আছেন। কেউ কেউ পাশের চায়ের দোকানে বসে অলস সময় পার করছিলেন।
মো. পারভেজ নামের এক চালক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল ৯টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা বাস আটকাতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা আমাদের চাবি নিয়ে চলে গেছেন। তাঁরা কেউ খারাপ ব্যবহার করেননি। আমরা আমাদের ওপরে যাঁরা আছেন, তাঁদেরকে বাস আটকের বিষয়টি জানিয়েছি।’
মৌমিতা পরিবহনের পরিচালকদের একজন মো. বাদশা বলেন, তাঁদের লোকজন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছেন। তাঁরা কথা বলে বিষয়টির সমাধান করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক প্রক্টর মো. আলমগীর কবির বলেন, ‘গতকাল মৌমিতা পরিবহনের একটি বাস আমাদের ছাত্রীকে অলমোস্ট হেনস্তা করেছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ ভুক্তভোগী আর সহকারী প্রক্টরকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই বাস শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। আমি ক্যাম্পাসে ওই বাসের চালক আর হেলপারকে দেখতে চাই।’