কালাইয়ে কৃষক দলের উপজেলা কমিটিতে আওয়ামী লীগের কর্মী, সমালোচনা-ক্ষোভ

লোকজনের সঙ্গে হাতে ফুলের নৌকা নিয়ে যাচ্ছেন নুর নবী (নীল রঙের পাঞ্জাবি)ছবি: সংগৃহীত

জয়পুরহাটের কালাইয়ে মো. নুর নবী নামে আওয়ামী লীগের কর্মীকে উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মো. সেলিম রেজা ও সদস্যসচিব কাজী মো. মনজুরে মওলা স্বাক্ষরিত ২৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে ১৯ নম্বর সদস্য হিসেবে নুর নবীর নাম দেখা যায়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর নেতা-কর্মীরা সমালোচনা শুরু করেন এবং তাঁদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

নুর নবী উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের দুধাইল নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং উদয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নুর নবীর বিরুদ্ধে কিডনি পাচারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এক যুগের ব্যবধানে তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। কয়েক দিন আগেও তিনি আওয়ামী লীগ করতেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর খোলস পাল্টে বিএনপি সেজেছেন।

কৃষক দলের কেন্দ্রীয় জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক লায়ন সিরাজুল ইসলাম নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কালাই উপজেলার অনুমোদিত কমিটির তালিকার ছবি এবং নীল রঙের পাঞ্জাবি পরিহিত এক ব্যক্তি দল বেঁধে ফুলের নৌকা হাতে নিয়ে যাচ্ছেন, এমন একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘নৌকার মাঝি নুর নবী এখন জয়পুরহাটের কালাই জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কর্ণধার।... আমি কৃষক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

সিরাজুল ইসলামের ওই পোস্টে নানা মানুষ মন্তব্য করেছেন। কালাই পৌর শহরের কাজী তানভিরুল ইসলাম মন্তব্যে লিখেছেন, ‘এটা কোনো ব্যাপার না আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী এখন বিএনপির কর্ণধার কালাই উপজেলায়’। জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খাজা শামছুল আলমের ছেলে খাজা আল-আমিন মন্তব্যে লিখেছেন, ‘উনি নৌকার মাঝি নন, উনি স্বপন সাহেবের (সাবেক হুইপ) ব্যক্তিগত হ্যান্ডস’।

জানতে চাইলে কৃষক দলের নেতা সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সত্য ঘটনা পোস্ট করেছি। নুর নবী আওয়ামী লীগ করতেন। সেটা কালাইয়ের বিএনপির প্রত্যেক নেতা-কর্মী জানেন।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা বিএনপির এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বার্থ ও লোভ যেখানে, সেখানে অনুপ্রবেশ তো থাকবেই। সুবিধাবাদীরা সব সময় সুবিধায় থাকতে চায়।

এ বিষয়ে মো. নুর নবীর মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি মোটরসাইকেলে আছেন, পরে কথা বলবেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে আজ সকালে একাধিকবার কল করলেও আর ধরেননি।

জানতে চাইলে জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব কাজী মনজুরে মওলা বলেন, ‘বিদ্যুৎ ভাই (সিরাজুল ইসলাম) তথ্য কোথায় পেলেন, সেটি আমাদের জানা নেই। নুর নবী বিএনপি করতেন। জেনে-শুনে তাঁর নাম দিয়েছি। আপনারাও খোঁজ নেন। বিদ্যুৎ ভাই যাঁকে উল্লেখ করেছেন, সেই নুর নবী আর কমিটির নুর নবী একই ব্যক্তি নন।’ কমিটির নুর নবী ইউপি সদস্য কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই নুর নবী ইউপি সদস্য নন। তাহলে অনুমোদিত তালিকায় ইউপি সদস্য নুর নবীর মুঠোফোন নম্বর কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটা মিসটেক।