ঝুট ব্যবসা নিয়ে আশুলিয়ায় বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, গুলি, আটক ৬
ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় একটি তৈরি পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও কয়েকটি গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিকেলে আশুলিয়ার কাইচাবাড়ী এলাকায় এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঢাকা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খানের লোকজন এবং আশুলিয়া থানা শ্রমিক দলের সভাপতি জায়েদ আলীর ছেলে মো. আলমগীরের লোকজনের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। গুলি ছোড়ার বিষয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে প্রুডেন্ট ফ্যাশন লিমিটেড নামের পোশাক কারখানাসংলগ্ন এলাকায় ওই কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুবদল নেতা আইয়ুব খানের লোকজনের সঙ্গে শ্রমিক দল নেতা জায়েদ আলীর ছেলে মো. আলমগীরের লোকজনের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়ার শব্দ পাওয়া যায়। পরে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মো. আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের পরিচিত নজরুল ইসলামের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের চুক্তি অনুসারে আজকে (মঙ্গলবার) ঝুট আনতে গেলে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে আইয়ুব খানের লোকজন। আগ্নেয়াস্ত্রসহ পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে। চুক্তির বৈধ কাগজপত্র আমাদের থাকলেও মাল বের করতে দেয়নি।’
নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে গত সপ্তাহে এক গাড়ি মাল বের করেছি। আজকে মাল মজুত হওয়ায় সেটি আমাদের নেওয়ার কথা। সকালে জানতে পারি আইয়ুব খানের লোক টিপু সুলতান, হারুন মণ্ডল, শাহজাহান মণ্ডলেরা মাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেছে। তারা কেন মাল নিচ্ছে জিজ্ঞেস করব, এই উদ্দেশ্যে সেখানে যাই। তাদের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই আমাদের দেখতে পেয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কারখানা থেকে বৈধভাবে আইয়ুব খান ব্যবসা করছেন বলে দাবি করেছেন তাঁর অনুসারী হারুন মণ্ডল। ব্যবসা ছিনিয়ে নিতে মো. আলমগীর, রিয়াদ মোল্লাসহ অন্যরা গুলি চালিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। হারুন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালিকপক্ষের সঙ্গে আইয়ুব ভাইয়ের চুক্তি রয়েছে। কিন্তু এর আগে ঝামেলা করে মো. আলমগীর, রিয়াদ মোল্লাসহ একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ ঝুট ছিনতাই করেছিল। আজকেও তারা পুনরায় ঝুট ছিনতাই করে ঝুট ব্যবসা দখলে নিতে চেয়েছিল। এ গ্রুপটি বিভিন্ন কারখানার ঝুট দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। আজও তারা দখল করতে এসে আমাদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। কয়েকজনকে মারধর করেছে।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নূর আলম সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ঝুট নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। শুনেছেন গুলির ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আলমগীরের বাসার আশপাশে অভিযান চালিয়ে ৪০টি রড পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁর বাসার আশপাশ থেকে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। অপর পক্ষের বেশ কয়েকজনকে মারধর করায় ভুক্তভোগীরা মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। মামলা প্রক্রিয়াধীন।