চাঁদপুরে প্রৌঢ় দম্পতি হত্যাকাণ্ডের দুই দিনেও কোনো গ্রেপ্তার নেই

চাঁদপুরের মানচিত্র

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার একটি বাড়ি থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক প্রৌঢ় দম্পতির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুই দিনেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাতে নিহত দম্পতির মেয়ে রীনা রানী বর্মণ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন।

হত্যার বিষয়ে পুলিশের পৃথক চারটি দল আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও সিআইডি পুলিশের মোট চারটি দল পৃথকভাবে কাজ করছে। এসব তদন্ত দল বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে। তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো রহস্য উদ্‌ঘাটন বা হত্যার কারণ জানা যায়নি।

পিবিআই চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরাও এখনো এর কোনো রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারিনি। তবে আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে। তবে এটি কোনো পরিকল্পিত হত্যা নাকি চুরির উদ্দেশ্যে ঘটেছে, সেই বিষয় ধরে আমরা এগোচ্ছি।’

গতকাল শুক্রবার উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে একটি বাড়ি থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ওই দম্পতির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সকাল আটটায় স্থানীয় এক নারী ফুল তুলতে গিয়ে ঘরের দরজা খোলা দেখেন। পরে তিনি ঘরের ভেতর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
নিহত দুজন হলেন বড়কুল ইউনিয়নের দাসপাড়া এলাকার উত্তম বর্মণ (৬২) ও তাঁর স্ত্রী কাজলী রানী বর্মণ (৫৫)। তাঁরা একই এলাকার দুলাল দাসের বাড়ির পাহারাদার হিসেবে বসবাস করতেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বালিশচাপা দিয়ে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, যেই ঘরে ওই দম্পতি খুন হয়েছেন, সেখান থেকে কিছু কাঁসার থালাবাসন চুরি হয়েছে। বাড়ির মালিক দুলাল দাস দাবি করেছেন, প্রায় ৭০ হাজার টাকার জিনিসপত্র চুরি হয়েছে।

আজ শনিবার বিকেলে হাজীগঞ্জে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। চাঁদপুর জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিনয় ভূষণ মজুমদার বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে কিংবা পার্শ্ববর্তী ব্যক্তিরা এ বাড়ি দখলের নীলনকশার অংশ হিসেবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। সাধারণ সম্পাদক রনজিত রায় চৌধুরী বলেন, ‘এটা জঘন্য হত্যাকাণ্ড। অচিরেই এ হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন হবে বলে আশা করছি।’