গোয়ালঘরে আগুন লেগে চারটি গরুর মৃত্যু, নিঃস্ব খামারি

পটুয়াখালী জেলার মানচিত্র

প্রতিদিনের মতো গোয়ালঘরে তিনটি বাছুর ও দুটি গরু রেখে নিজের ঘরে  ঘুমিয়ে ছিলেন মালিক জাহাঙ্গীর খলিফা (৪০)। গভীর রাতে প্রতিবেশীদের চিৎকার শুনে বেরিয়ে এসে দেখেন গোয়ালঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ছুটে গিয়ে একটি বাছুর বাঁচাতে পারলেও দুটি বাছুরসহ চারটি গরু আগুনে দগ্ধ হলে মারা যায়। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে পটুয়াখালীর সদর উপজেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের পীরতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর খলিফার জীবন-জীবিকাই ছিল এই পাঁচটি গরু। সারা দিন গরুর যত্ন করে দিন কাটত তাঁর। গরুর দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। আগুন থেকে গরুগুলো বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে জাহাঙ্গীর পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

গোয়ালঘরে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, জমি বিক্রি করে এবং ধারদেনা করে তিনি ছোট আকারের গরুর খামার গড়ে তোলেন। তাঁর খামারে দুটি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভি ও তিনটি বাছুর ছিল। প্রতিদিন কম করে হলেও  ৪০ লিটার দুধ দিত গাভি দুটি। দুধ বিক্রি করেই চলত তাঁদের সংসার।

অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, শনিবার রাত ১টার দিকেও ঘুমানোর আগে গোয়ালঘরে ঘুরে এসে স্বাভাবিক দেখতে পান। রাত দুইটার দিকে পাশের ঘরের লোকজনের চিৎকারে ঘুম ভাঙে জাহাঙ্গীর ও তাঁর পরিবারের। ঘর থেকে বেরিয়ে তাঁরা দেখেন গোয়ালঘরে দাউ দাউ আগুন জ্বলছে। এ সময় গরুগুলো বাঁচাতে গোয়ালঘরে ঢুকে পড়েন তিনি। রশি কেটে একটি বাছুর বাঁচাতে সক্ষম হলেও চোখের সামনে পুড়ে মারা যায় বাকি চারটি গরু। গরু বাঁচাতে গিয়ে  আগুনে তাঁর হাত, কাঁধ ও পিঠের কিছু অংশ পুড়ে যায়।

জাহাঙ্গীর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, অনেক কষ্টে গড়ে তোলা খামারের গরুগুলো এভাবে আগুনে মারা যাবে, তা ভাবতেও পারেননি তিনি।  শক্রতাবশত কেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। এ ঘটনায় তিনি নিঃস্ব হয়েছেন বলে কেঁদে ফেলেন।  এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।