সন্দ্বীপে রাতে গরু–ছাগল নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছিল মানুষ, সকাল হতেই ফাঁকা

জনতা বাজারের নিজেরা করি মুজিবকিল্লায় অবস্থান নেওয়া লোকজন গতকাল শনিবার এসব খুঁটিতে গরু–ছাগল বেঁধে রেখেছিলেন। তবে আজ রোববার সকালে তাঁরা নিজেদের গরু–ছাগল সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন
ছবি: প্রথম আলো

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত ঘোষণার পর গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের উপকূলীয় এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে উপজেলা প্রশাসন ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকেরা মাইকিং করেন। এরপর বিকেলের দিকে স্থানীয় কিছু মানুষ গরু-ছাগল নিয়ে মুজিবকিল্লায় আসতে শুরু করে। রাতে তারা মুজিবকিল্লায় অবস্থান করলেও আজ রোববার সকালে তারা কিল্লা ছেড়ে চলে গেছে।

উপকূলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার ভয়ে কিছু মানুষ মুজিবকিল্লায় আশ্রয় নিয়েছিল। তবে সকাল হতে না হতেই তারা আবার বাড়ি ফিরে গেছে। সন্দ্বীপের জনতা বাজারের নিজেরা করি মুজিবকিল্লা, জনতা বাজার পশ্চিম মুজিবকিল্লা, বাংলাবাজারের এসডিআই মুজিবকিল্লা ও টাওয়ার রাস্তার মাথা মুজিবকিল্লায় এই চিত্র দেখা গেছে।

উপজেলার উড়িরচরের বাসিন্দা নুর উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, একেবারে উপকূলে থাকা কিছু লোক বাংলাবাজার এলাকায় মুজিবকিল্লায় গিয়েছিল। তবে সকালে সবাই আবার বাড়ি ফিরে গেছে। মূলত রাতে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আশঙ্কায় তারা কিল্লায় গিয়েছিল। আজ দিনের বেলা ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে তারা অবস্থা বুঝে আবার কিল্লায় ফিরবে।

গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছিলেন স্থানীয় কিছু মানুষ। গতকাল বিকেলে সন্দ্বীপের উড়িচরের একটি মুজিবকিল্লায়
ছবি: সংগৃহীত

সন্দ্বীপের আরেক বাসিন্দা সাজিদ মোহন প্রথম আলোকে বলেন, মুছাপুর ইউনিয়নের মুছাপুর ভুলাইরগো মুজিবকিল্লায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কেউ আশ্রয় নিতে আসেনি। সন্দ্বীপের মানুষ ঘূর্ণিঝড় আঘাত আনার আগমুহূর্ত পর্যন্ত বাড়ি ছাড়তে চায় না।

উপজেলা প্রশাসনের দাবি, সন্দ্বীপের উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ গতকাল সন্ধ্যার আগেই উপকূল থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে এসেছে। এর মধ্যে ১৫ হাজারের মতো মানুষ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। অন্য লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা তাদের স্বজনদের বাড়িতে উঠেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সম্রাট খীসা প্রথম আলোকে বলেন, রাতে উপকূলীয় এলাকার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এলেও সকালে আবার সবাই যে যার মতো নিজ বাড়িতে ফিরে গেছে। তবে আজ সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি না হওয়া আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজন নিজ বাড়িতে ফিরে গেছে বলে জানা গেছে।