নোয়াখালীতে মডেল মসজিদের একটি কক্ষে বিস্ফোরণ, দরজা-জানালা ক্ষতিগ্রস্ত

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদের একটি কক্ষে বিস্ফোরণে দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের দুটি দরজা, দুটি জানালা, মেঝে ও সিলিংয়ের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদের দ্বিতীয় তলায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের দুটি দরজা, দুটি জানালা, মেঝে ও সিলিংয়ের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে বিস্ফোরণে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বিস্ফোরণের খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে সেখানে ছুটে যান জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ও পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলামসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এরপর সেখানে যান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত সোয়া ১১টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর এলাকায় নির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদের দ্বিতীয় তলায় মুয়াজ্জিন ও খাদেমের থাকার কক্ষে হঠাৎ এ বিস্ফোরণ হয়। ওই সময় কক্ষটিতে মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের কেউ ছিলেন না।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বেগমগঞ্জ মডেল মসজিদের দায়িত্বে থাকা ফিল্ড সুপারভাইজার আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, রাত ১০টার দিকে তিনি মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের থাকার ওই কক্ষে তাঁর একটি কাপড়ের ব্যাগ ও দাপ্তরিক কিছু নথি রেখে আসেন। রাত ১১টার পর বিস্ফোরণের শব্দ পান। ঘটনার সময় তিনি মসজিদের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে অন্য কর্মচারীদের নিয়ে আসবাব গোছাচ্ছিলেন। এ সময় আশপাশের লোকজন আগুন বলে চিৎকার করলে তিনি দ্রুত মসজিদ থেকে বেরিয়ে যান। পরে আবার এসে দেখেন দ্বিতীয় তলায় খাদেম ও মুয়াজ্জিনদের থাকার কক্ষে আগুন জ্বলছে। দরজা, জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি তিনি দ্রুত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান।

আজ সকালে মডেল মসজিদে বিস্ফোরণস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষটির মাঝামাঝি স্থানে আগুনে পোড়া জিনিসপত্রের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত জানালার কাচ পড়ে আছে মেঝেতে। বিস্ফোরণের কারণে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে পুরো কক্ষটি ধোঁয়ায় বিবর্ণ হয়ে গেছে। বিস্ফোরণস্থলটিকে ইট দিয়ে চারপাশ ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে মডেল মসজিদের একটি কক্ষে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বিস্ফোরণের উৎস সম্পর্কে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় ওই পক্ষে কেউ ছিল কি না, সে বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। বিস্ফোরণের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞ দলকে খবর পাঠানো হয়েছে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রতিবেদন দিলে এ বিষয়ে দ্রুত পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য সিআইডির বিশেষজ্ঞ দলকে খবর পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মসজিদের খাদেম ও মুয়াজ্জিনদের প্রশাসনের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিস্ফোরণের বিষয়ে সিআইডির কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।