দেড় বছরের ইরফানকে এতিম করে দিল সড়ক দুর্ঘটনা

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দেড় বছরের শিশু ইরফান তার বাবা–মাকে। এখন সে দাদা সাদেক শেখ ও দাদি রিজিয়া বেগমের কাছে আছেছবি: প্রথম আলো

মা–বাবার আদরে যখন বেড়ে ওঠার কথা, সেই সময় তাঁদের চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলল দেড় বছর বয়সী শিশু ইরফান। গত মঙ্গলবার ফরিদপুর সদরের দিগনগর এলাকায় বাসের সঙ্গে ছোট ট্রাকের সংঘর্ষে প্রথমে ইরফানের বাবা ইকবাল শেখ (২৫) এবং পরে তার মা পপি আক্তারের (২১) মৃত্যু হয়।

বোয়ালমারী উপজেলার কুমাইল গ্রামের ইকবাল কৃষিকাজ করতেন। তিন বছর আগে পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হিদাডাঙ্গা গ্রামের মেয়ে পপি আক্তারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দেড় বছর আগে ইরফানের জন্মের পর অভাবের সংসারে কিছুটা সচ্ছলতার আশায় কৃষিকাজের পাশাপাশি রিকশাভ্যান চালাতে শুরু করেন।

আরও পড়ুন

ইকবালের ভাই ইমামুল শেখ (২৮) বলেন, ইকবালকে মঙ্গলবার রাতে বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পপিকে গতকাল বুধবার দুপুরে তাঁর বাবার বাড়ি আলফাডাঙ্গার হিদাডাঙ্গা গোরস্থানে দাফন করা হয়। ইরফান এখন দাদার বাড়িতে আছে। তার শরীরজুড়ে ব্যথা। শরীরে হাত পড়লেই ব্যথায় কেঁদে ওঠে। দাদি রিজিয়া বেগম ছাড়া আর কারও কোলে সে যাচ্ছে না। সব সময় শুধু কান্না করছে আর অস্ফুটস্বরে ‘মা যাব’, ‘মা যাব’ করছে। অভাবের সংসারে শিশু ইরফানের কী হবে, সেটা নিয়েই ভাবছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন

ইকবালের বাবা মো. সাদেক শেখ বলেন, ‘আমার কী সর্বনাশ হইয়া গেল! ইরফান যখন মা–বাবার কথা জানতে চাইবে, কী জবাব দেব?’ মা রিজিয়া বেগম বলেন, ‘ছেলে ও ছেলের বউ হারানোর যাতনা, অবুঝ ইরফানের কান্না—এই কান্না কীভাবে থামাব, জানি না।’