বাঁধ নির্মাণে ধীরগতি ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

ভাঙন অংশ সংস্কার না হওয়ায় ফের পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ভোগাই নদের শহর রক্ষা বাঁধের ভাঙন অংশ এখনো মেরামত করা হয়নি। গতকাল দুপুরে উত্তর গড়কান্দায়
ছবি: প্রথম আলো

পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর শহরের উত্তর গড়কান্দা মহল্লায় ভোগাই নদীতে শহর রক্ষা বাঁধে ১১০ মিটারজুড়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। সময় পেরিয়ে গেলেও ভাঙন অংশ সংস্কার না হওয়ায় ফের পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁরা দ্রুত বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত বছর ভোগাই নদীতে ঢল নামে। এতে পানির স্রোতে শহরের উত্তর গড়কান্দা এলাকায় নদীর ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে যায়। এই ভাঙন অংশ দিয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করে চারটি মহল্লার প্রায় ৭০০ পরিবারের বাড়িঘরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

এ সময় বাঁধের সামনে বাগানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে ভুক্তভোগী অনেক পরিবার স্কুলের বারান্দায় এবং নিজ বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন।

বাঁধটি সংস্কারে পাউবোর পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১১০ মিটার বাঁধ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৩৮ লাখ টাকা। এ কাজের দায়িত্ব পায় রিফাত এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাঁধ সংস্কারে গত ৪ মে কাজ শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু গত ১৭ জুন ফের পাহাড়ি ঢলে এই ভাঙন অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে উত্তর গড়কান্দা, গড়কান্দা, গুনাপাড়া ও শিমুলতলা মহল্লায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

এতে উত্তর গড়কান্দা এলাকায় ৫০০ মিটার সড়ক পানিতে ডুবে যায়। এ ছাড়া ৭০০ পরিবারের বাড়িঘরে এবং থাকার ঘরে হাঁটুসমান পানি থাকায় পরিবারের লোকজন দুর্ভোগে পড়েন। নদীতে পানি কমে যাওয়ায় এক দিন পর বাড়িঘর থেকে ঢলের পানি নেমে যায়। কিন্তু বাঁধটি সংস্কার না হওয়ায় ফের পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকাবাসী।

গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধের ভাঙন অংশে নদীতে ১৬০টি গাছের গুঁড়ি পুঁতে পাইলিং করা হয়েছে। ৪ হাজার ৩৫০টি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো কাজ করছে না। ঈদের আগে কাজ করা হলেও ঈদের পর এখন কাজ শুরু করা হচ্ছে না।

রিফাত এন্টাপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যে নদীতে পাইলিং করতে বলি (গাছের গুঁড়ি) পোঁতা হয়েছে। ৪ হাজার ৩৫০টি জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে ভাঙন অংশে বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে। আশা করছি, ১০–১২ দিনের মধ্যে বাঁধ সংস্কারের নির্মাণকাজ শেষ করা হবে।’

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিকুর রহমান বলেন, ১১০ মিটার বাঁধ সংস্কারকাজ ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে কাজটি আটকে রয়েছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে।