কুড়িগ্রামে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
কুড়িগ্রামে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর মধ্যে তিস্তা নদীর পানি আজ শনিবার সকাল থেকে ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত আছে। ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মৌসুমি ডাল ও বাদামখেত তলিয়ে গেছে।
আজ দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর মধ্যে পানি বেড়ে ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ১ দশমিক ৬৪ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২ দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়ন ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে রোপণ করা বাদাম ও ডালখেত প্লাবিত হয়েছে। সাহেবের আলগা ইউনিয়নের মাঝের আলগার চরের বাসিন্দা মাইদুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন থেকে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ব্রহ্মপুত্র নদের চরে লাগানো বোরো ধান ও ডাল খেত তলিয়ে গেছে। ভারী বৃষ্টির কারণে বাদামখেতের চারা উপড়ে পড়েছে।
তিস্তা নদীর পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা বুড়িরহাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া তিস্তা নদীর তীরের থেতরাই ইউনিয়নের গোরাইপিয়া, জুয়ান সতরা, চর নিয়াসা ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখা, গতি আসাম চরের নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ও উজানে (ভারতে) ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে এসব নদ-নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহতি থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এতে এসব নদ-নদীর চরাঞ্চলে মৃদু বন্যা হতে পারে।
ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস প্রামাণিক প্রথম আলোকে বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে তিস্তার পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। উজানের ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।