কুলিয়ারচরে কেরোসিন ঢেলে গৃহবধূর শরীরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১

কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে এক গৃহবধূর (২০) শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ওই গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন ওই গৃহবধূর প্রতিবেশী বায়েজিদ মিয়া (২৪) ও তাঁর বাবা নূর ইসলাম। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় বায়েজিদের বাবা নূর ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নূর ইসলামকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এদিকে দগ্ধ ওই গৃহবধূ বর্তমানে কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মামলার এজাহার ও ওই গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন ধরে বায়েজিদ মুঠোফোনে ওই গৃহবধুকে বিরক্ত করছিলেন। একপর্যায়ে বায়েজিদ ওই গৃহবধূকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। তবে ওই গৃহবধূ এই প্রস্তাবে সাড়া না দেননি। এতে বায়েজিদ ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নারীকে অ্যাসিডে, নয়তো আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন। গত রোববার রাতে ওই গৃহবধূ ঘর থেকে বের হলে বায়েজিদ তাঁর এক সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে গৃহবধূর মুখ চেপে ধরেন। পরে গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।

কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তুফা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে মূল অভিযুক্ত বায়েজিদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া আজ সকালে বায়েজিদের বাবা নূর ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নূর ইসলামকে মামলার আসামি করার কারণ জানতে চাইলে ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, ওই গৃহবধূকে উত্ত্যক্তের বিষয়টি নূর ইসলাম জানতেন। গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে নূর ইসলামকে এ বিষয়ে অভিযোগও জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

ঘটনার পর থেকেই বায়েজিদ গা ঢাকা দিয়েছেন। পুলিশি হেফাজতে নূর ইসলাম বলেন, ‘প্রথমত ঘটনার দিন আমার ছেলে বাড়ি ছিল না। ঢাকায় কর্মস্থলে ছিল।’ নিজে আসামি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নূর ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনায় ছেলের কতটা দোষ জানি না, তবে এটা জানি, আমার কোনো দোষ নেই।’

গৃহবধূর স্বামী বর্তমানে হাসপাতালে স্ত্রীর সঙ্গে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী জানিয়েছে তাঁর শরীরে যন্ত্রণা হচ্ছে।’

গৃহবধূর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে মুঠোফোনে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই বিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।