বলেশ্বর নদে তীব্র ভাঙনে জমি বিলীন, হুমকিতে বেড়িবাঁধ
শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ বেড়িবাঁধের গাবতলা এলাকায় মূল বাঁধের নিচে ১০০ ফুট এলাকার বেশ কিছু সিসি ব্লকও নদে বিলীন হয়ে গেছে।
বাগেরহাটের শরণখোলায় গাবতলা গ্রামে বলেশ্বর নদে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিন বলেশ্বরের নদের ভাঙনে ওই গ্রামের ১০ একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। নদটি ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে রয়েছে বেড়িবাঁধ, বড় একটি বাজার এবং একটি উচ্চবিদ্যালয়ের ভবন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বলেশ্বরের ভাঙনে বিলীন হয়েছে গাবতলা গ্রামের প্রায় ১০ একর ফসলি জমি। ঝুঁকিতে রয়েছে বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা শতাধিক পরিবার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ নম্বর পোল্ডারের শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ বেড়িবাঁধের গাবতলা এলাকায় মূল বাঁধের নিচে ১০০ ফুট এলাকার বেশ কিছু সিসি ব্লকও নদে বিলীন হয়ে গেছে। বলেশ্বরতীরের বিশাল এলাকাজুড়ে ফাটল ধরেছে।
শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ৩৫/১ নম্বর পোল্ডারের বাঁধের কাছে ভাঙন শুরু হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বারেক হাওলাদার বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে ভাঙন শুরু হয়। জোয়ার–ভাটার টানে ভাঙছে। দুই দিনে বলেশ্বরপাড়ের প্রায় ১০ একর জমি নদে বিলীন হয়েছে। এবারের ভাঙনে আমাগো পরিবারের প্রায় ছয় একর জমি বিলীন হয়ে গেছে।’
ন্থানীয় সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন রাজিব বলেন, ভাঙন ধীরে ধীরে তীব্র রূপ ধারণ করছে। মূল বাঁধের নিচ থেকে প্রায় ১০০ ফুট ধসে গেছে। এ ছাড়া বিশাল এলাকায় ফাটল ধরেছে। গাবতলা বাজার থেকে বাবলাতলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামে হেমায়েত হাওলাদারের বাড়ি। তাঁর বাড়ির পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে গেছে প্রমত্ত বলেশ্বর নদ। এক পাশে বাগেরহাটের শরণখোলা, অন্য পাশে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলা। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ভাঙছে বলেশ্বরের শরণখোলা তীর। এতে হেমায়েত হাওলাদারের মতে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলাসহ নদ–তীরবর্তী গ্রামগুলোর কয়েক হাজার মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাগেরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙনরোধে বিকেল থেকে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করা হয়েছে। আপাতত এক হাজার ব্যাগ ডাম্পিংয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রয়োজনে আরও জিও ব্যাগ ফেলা হবে। ভবিষ্যতের জন্য নদটির স্রোত ও অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করে বাঁধের বিষয়ে কী করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’