গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ
রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকার সরাসরি বাস চলাচল আজ সোমবার ভোর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় পরিবহনের মালিকেরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
এর আগে গত জুন মাসে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে বিরোধের জন্য একবার এবং শ্যামলী পরিবহনের সঙ্গে বিরোধে আরেকবার রাজবাড়ী থেকে ঢাকার পথে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করা হয়।
রাজবাড়ী বাস মালিক গ্রুপ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ী থেকে প্রতিদিন ঢাকার উদ্দেশে ৫৫টি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে চারটি বাস শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি)। সাধারণ বাসে ভাড়া ৩৯০ টাকা ও এসি বাসে ৬০০ টাকা। রাজবাড়ী থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট হয়ে ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যায়।
রাজবাড়ী বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক বলেন, গত মাসে রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রুপের সঙ্গে ঢাকা বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের দুটি বাস যাতায়াত করার সিদ্ধান্ত হয়। কথা ছিল, এই দুটি বাস ঢাকা থেকে ছেড়ে আসবে ও আবার ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এভাবেই বাস যাতায়াত করছিল। কিন্তু গতকাল রোববার ঢাকা থেকে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের পাঁচটি বাস রাজবাড়ীর উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বিকেলে রাজবাড়ী থেকে গোল্ডেন পরিবহনের দুটি বাস ঢাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ঢাকায় অবস্থিত রাজবাড়ীর সব বাসের কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে আজ ভোর থেকে রাজবাড়ীর কোনো বাস সরাসরি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে না।
আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, আগেও বাস চলাচল নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়। কিন্তু গোল্ডেন লাইন পরিবহনের মালিকেরা সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাঁদের ইচ্ছেমতো বাস চালাচ্ছিলেন।
আজ সকালে রাজবাড়ী শহরের বড়পুল ও নতুন বাজার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাগামী বাসের কাউন্টারগুলো বন্ধ। দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। ঢাকার যাত্রীদের কেউ কেউ লোকাল বাসে দৌলতদিয়া যাচ্ছেন। এরপর নদী পার হয়ে ওপার থেকে ঢাকা যাবেন। কেউ কেউ যাচ্ছেন ফরিদপুর। সেখান থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যাবেন। তাঁদের অনেকেই মাহেন্দ্র ও ইজিবাইকে যাচ্ছিলেন।
রেজাউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি এসেছিলেন বাসের জন্য। কাউন্টার বন্ধ দেখে তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাব। সঙ্গে শিশু ও নারী আছে। কিন্তু এসে দেখি ঢাকার বাস বন্ধ। শুনেছি, মালিকদের দ্বন্দ্বের জের ধরে এই অবস্থা হয়েছে। আগেও বাস বন্ধ হয়ে ছিল। এভাবে হুটহাট বাস বন্ধ হলে একটি ঘোষণা দেওয়া উচিত। তাহলে মানুষ আগেই জানতে পারবে। আর প্রশাসনেরও উচিত এসব ভোগান্তির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া।’
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, ‘রাতেও আলোচনা হয়েছে। গোল্ডেন লাইন পরিবহনের দুটি বাস যাতায়াত করার কথা ছিল। তারা এই রুটে চারটি বাসে যাত্রী পরিবহন করতে চাইছে। এ ঘটনায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনা হচ্ছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যা নিরসন করে বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে পারব।’