নোয়াখালীতে হাসপাতালে হামলা, আতঙ্কে রোগীদের দিগ্বিদিক ছোটাছুটি
নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলার সময় আতঙ্কে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা দিগ্বিদিক ছুটে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় হাসপাতালের এক আয়া ও দুই কর্মচারী আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চৌমুহনী কলেজ রোড এলাকায় অবস্থিত রাবেয়া প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কাউকে আটক করতে পারেনি।
হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক আবু নাছের আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সময় তিনি অস্ত্রোপচার কক্ষে একজন রোগীর অস্ত্রোপচার করছিলেন। এ সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে ৫০–৬০ জনের একটি দল আকস্মিকভাবে হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। কর্তব্যরত কর্মীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা ভাঙচুর শুরু করে। এতে রোগী ও স্বজনেরা চরম আতঙ্কে পড়েন।
হামলাকারীরা হাসপাতালের নিচতলায় থাকা আসবাব, একাধিক কম্পিউটার ও রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করে। একই সঙ্গে ক্যাশ কাউন্টার থেকে নগদ অর্থ লুট করা হয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।
হামলায় আহত হয়েছেন কর্মচারী রতন দেবনাথ (৬০), তোফাজ্জল হোসেন (৪০) ও আয়া শাহীনুর আক্তার (৪৫)। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসক আবু নাছের বলেন, প্রায় তিন দশক ধরে তিনি ও তাঁর স্ত্রী রাবেয়া খানম এই হাসপাতালের মাধ্যমে এলাকার মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। কোনো রোগীর মৃত্যু বা বড় ধরনের চিকিৎসা–সংক্রান্ত কোনো জটিলতা হয়নি। জটিল রোগী এলে তাঁরা দ্রুত অন্যত্র স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। তা সত্ত্বেও কেন এই হামলা হলো, তা বুঝতে পারছেন না।
আবু নাছের আরও জানান, হামলাকারীদের অনেককে স্থানীয়ভাবে শনাক্ত করা গেছে এবং সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে। এ ঘটনায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০–১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। হামলায় তাঁর ৫০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালটিতে হামলা ও ভাঙচুরের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।