ভালোবেসে আট শতাধিক ভক্তের শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকেছেন হাসমত

আর্জেন্টিনার খুদে ভক্তদের শরীরে দলের পতাকা আঁকছেন হাসমত আলী। ইতিমধ্যে তিনি আট শতাধিক ভক্তের শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকেছেন। শনিবার দুপুরে বেড়া পৌর এলাকার বনগ্রাম মহল্লায়
ছবি: প্রথম আলো

হাসমত আলী ওরফে টোকোন পেশায় একজন চিত্রশিল্পী। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড, ব্যানার, বিলবোর্ড আঁকাই তাঁর কাজ। আর্জেন্টিনা ফুটবল দল ও মেসিকে দারুণ ভালোবাসেন। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিশ্বকাপ শুরুর পর বিনা মূল্যে আট শতাধিক সমর্থকের শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকেছেন তিনি।

হাসমতের বাড়ি পাবনার বেড়া পৌর এলাকার বনগ্রাম মহল্লায়। বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর আগে থেকেই বেড়া পৌর এলাকায় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দলের ভক্তদের উন্মাদনা শুরু হয়। প্রিয় দলের পতাকা, ব্যানার টাঙানোর প্রতিযোগিতায় নামেন ভক্তরা।

নিজ দলের খেলার দিন অনেকে হাত-মুখসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় পতাকা এঁকে খেলা দেখতে ভালোবাসে। ইতিমধ্যে পৌর এলাকাজুড়ে শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রিয় দলের পতাকা আঁকানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এমন আগ্রহের পেছনে মূল ব্যক্তি হাসমত।

হাসমত আলী প্রথম আলোকে বলেন, যেদিন আর্জেন্টিনা দলের খেলা থাকে, সেদিন দুপুর থেকেই তাঁর বাড়িতে ভক্তদের আনাগোনা শুরু হয়। উদ্দেশ্য মুখে, হাতে বা শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা আঁকানো। আর্জেন্টিনার জার্সির সঙ্গে শরীরে পতাকা এঁকে বড় পর্দায় সবার সঙ্গে খেলা দেখা বা ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। দল জিতলে পরদিন সকালেও অনেকে পতাকা আঁকানোর জন্য তাঁর বাড়িতে হাজির হন।

সরেজমিনে হাসমত আলীর বাড়ির পাশে দেখা গেছে, হাসমত আলীকে ঘিরে শিশু-কিশোরদের ভিড়। হাসমত আলী এক মনে শিশু-কিশোরদের মুখে বা শরীরে রংতুলি দিয়ে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকে চলেছেন। সঙ্গে অবশ্য অনেকে বাংলাদেশের পতাকাও আঁকছেন।

পতাকা আঁকতে আসা বনগ্রাম মহল্লার তাসমিয়া, আরিফসহ ১০-১২ জন শিশু-কিশোর জানায়, গতকাল রাতে আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে উঠেছে। এ জন্য আজ আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকে ঘুরে বেড়াবে তারা। তাই পতাকা আঁকার জন্য এসেছে। খেলা উপলক্ষে কালও তাদের অনেকে হাসমত আলীর মাধ্যমে পতাকা এঁকেছে।

হাসমত আলী বলেন, ‘আর্জেন্টিনাকে ভালোবাসি। তাই প্রিয় দলের পতাকা কেউ আঁকিয়ে নিতে চাইলে “না” করতে পারি না। আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে ওঠায় আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জনের শরীরে পতাকা এঁকেছি। গতকাল কোয়ার্টার ফাইনাল উপলক্ষে ২৫০ থেকে ৩০০ জনের শরীরে এঁকেছি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত আট শতাধিক মানুষের শরীরে পতাকা এঁকেছি। আশা করি, আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠবে এবং শেষ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি পতাকা হয়তো আমাকে আঁকতে হবে।’

আর্জেন্টিনার সমর্থক ও বেড়া বাজারের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, ‘শুনেছি, হাসমত আলী এ পর্যন্ত ৭০০ থেকে ৮০০ জনের শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকেছেন। তাঁর আঁকা পতাকার কারণে গোটা এলাকায় উৎসবের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এভাবে পতাকা আঁকায় আনন্দ আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে।’