টোল আদায় হয় মাসে ৩০ লাখ, তবু বাতি জ্বলে না ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুতে

সেতুর ওপর ৩১টি ল্যাম্পপোস্ট থাকলেও কোনোটিই আলো দিচ্ছে না। এর মধ্যে সেতুটিতে ৫টি ল্যাম্পপোস্টের অর্ধেকের বেশি অংশ নেই।

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুর কিছু ল্যাম্পপোস্টের অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে গেছে। এতে রাতে সেতুটি অন্ধকারে ডুবে থাকে
ছবি: প্রথম আলো

২০০৫ সালে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ব্যস্ত এ সেতু দিয়ে মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা টোল আদায় হয়। তবে সে অনুযায়ী সেতুর সংস্কার করা হয় না। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, প্রায় পাঁচ বছর ধরে রাতে সেতুতে বাতি জ্বলে না। পুরোনো হয়ে যাওয়া ল্যাম্পপোস্টগুলো সংস্কার করে আলো জ্বালানোর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কটি মৌলভীবাজারের যাতায়াতের পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুটি এ সড়কের মধ্যেই পড়েছে। এ ছাড়া সড়কটি ফেঞ্চুগঞ্জ, কুলাউড়া, রাজনগরসহ আশপাশের এলাকায় যাতায়াতের জন্যও ব্যবহার করা হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর ওপর ৩১টি ল্যাম্পপোস্ট থাকলেও কোনোটিই আলো দিচ্ছে না। এর মধ্যে সেতুটিতে পাঁচটি ল্যাম্পপোস্টের অর্ধেকের বেশি অংশ নেই। কেউ খুলে নিয়ে গেছে বা ভেঙে গেছে। বাকি ল্যাম্পপোস্টগুলোর বাতির অংশ ভাঙা। সেতুটির দক্ষিণ পাশের ফেরিঘাট মোড়ে প্রায় ১৫টি দোকানপাট রয়েছে। উত্তর পাশে রয়েছে টোল প্লাজা। টোল প্লাজায় আলো জ্বললেও সেতুটি দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্ধকারের মধ্যে।

ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী আহমদ হোসেন বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে বাতিগুলো জ্বলছে না। ল্যাম্পপোস্টে আলো না থাকায় খুঁটিও উধাও হয়ে গেছে। সেতু দিয়ে পারাপার করা যাত্রীরা অনিরাপদ বোধ করেন। 

সেতু দিয়ে চলাচল করা মাইক্রোবাসের চালক ওয়াহিদ মিয়া বলেন, সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়ক দিয়ে প্রায়ই তিনি যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করেন। রাতের বেলা সেতুটি অন্ধকার থাকে। এ সময় ভয় লাগে। কারণ, আশপাশে মানুষের আনাগোনা থাকে না। এতে ভয়ে ভয়েই সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। আলো জ্বালানো থাকলে ভয় অনেকটা কম লাগত।

সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এতে খরচ হয়েছিল ২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সেতুটির টোল আদায় হয় মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। কিন্তু প্রায় পাঁচ বছর ধরে সেতুটির ল্যাম্পপোস্টগুলো অকেজো হয়ে গেছে। দুই বছর আগে সেতুটিতে লাগানো হয়েছে চারটি সৌরবিদ্যুতের পোস্ট। বর্তমানে সেতুর ওপর সৌরবিদ্যুতের চারটি বাতি ছাড়া বাকি ল্যাম্পপোস্টগুলো আলো দেয় না।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৌরবিদ্যুতে কিছুটা আলো দিচ্ছে। তবে মাঝেমধ্যে সৌরবিদ্যুতের বাতিগুলোও সমস্যা করে। এ আলো পর্যাপ্তও না। রাতে অন্ধকার থাকায় সেতু দিয়ে চলাচল করতে আতঙ্কিত হন পথচারীরা।

সিলেট সওজ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ল্যাম্পপোস্টের বিষয়টি সড়ক বিভাগ সরাসরি তদারকি করে না। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ল্যাম্পপোস্টগুলো দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সিটি করপোরেশন এলাকায় হলে সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা এলাকায় হলে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সেটি দেখাশোনা করার কথা। তবে ফেঞ্চুগঞ্জ পৌরসভা নেই। এ জন্য ঠিক কার ওপর এ বাতি দেখভালের দায়িত্ব, তিনি তা বলতে পারছেন না।