সিলেটে সাড়ে সাত ঘণ্টা পর পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত

ধর্মঘট স্থগিতের পর চলতে শুরু করেছে যানবাহন। বুধবার বিকেলে সিলেট বিমানবন্দর সড়কের বড়শলা এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। বুধবার সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মেয়র ও প্রশাসনের আশ্বাসে স্থগিত করেছে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

ধর্মঘট স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. দিলু মিয়া।

এর আগে বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের সভাপতিত্বে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট মহানগর পুলিশ, জেলা পুলিশ ও জালালাবাদ গ্যাসের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

মো. দিলু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের মধ্যস্থতায় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা দাবিগুলো নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে আগামী রমজান মাস পর্যন্ত তিন দফা দাবির মধ্যে প্রধান দাবি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে গ্যাসের সংকট হবে না বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের লিমিট কেন শেষ হয়ে যায়, সেটি জানতে একটি কমিটি গঠন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে গঠিত হবে। এর বাইরে রাজনৈতিক মামলায় পরিবহন শ্রমিকদের গ্রেপ্তার এবং জামিনে মুক্তি, সিটি করপোরেশনের কর্মীদের সঙ্গে ২০২১ সালে সংঘর্ষের ঘটনায় আপসের পরও মামলা প্রত্যাহার না হওয়ার বিষয়টি মেয়র সামধান করবেন বলে জানিয়েছেন। এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

দিলু মিয়া আরও বলেন, বিকেলের পর থেকে পরিবহন শ্রমিকেরা যানবাহন নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করবেন।

এর আগে সকাল থেকে শুরু হওয়া পরিবহন ধর্মঘটে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে না পেরে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। সকাল থেকে সিলেটের কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো যাত্রীবাহী যানবাহন ছেড়ে যায়নি। সকালে অনেকে বিভিন্ন গন্তব্যের জন্য বের হয়ে যানবাহন না পেয়ে বাস টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান করেন। নগরের অভ্যন্তরেও যানবাহন চলাচল কম লক্ষ করা গেছে। কিছু ব্যক্তিগত যানবাহন, মোটরসাইকেল ও রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। মাঝেমধ্যে দু–একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করেছে।

অনেকে যানবাহন না পেয়ে মোটরসাইকেল ভাড়া করে গন্তব্যের উদ্দেশে সিলেট ত্যাগ করেছেন। বুধবার সকালে নগরের হুমায়ুন রশিদ চত্বর এলাকায় মৌলভীবাজার যাওয়ার জন্য বের হয়ে বিপাকে পড়েছিলেন কৌশিক রায় নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, তাঁর জানা ছিল না বুধবার পরিবহন ধর্মঘট। এ জন্য সকাল সকাল নগরের মিরাবাজার এলাকা থেকে মৌলভীবাজার যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়েছিলেন। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে আসার পর জানতে পারেন ধর্মঘট। এ সময় কৌশিক রায়ের মতো অনেক যাত্রী হুমায়ুন রশীদকে চত্বর এলাকায় অবস্থান করতে দেখা যায়।

এদিকে নগরের প্রবেশমুখগুলোতে সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকেরা বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে বাধা দিয়েছেন। নগরের দক্ষিণ সুরমার চণ্ডীপুল, দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী ও সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের তেমুখি এলাকায় অবস্থান নিয়ে পরিবহন শ্রমিকেরা ধর্মঘট চলাকালে সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন।